প্রকাশ: ১ জুলাই, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন
কূটনৈতিক প্রতিবেদক : করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মোকাবেলায় জাতিসংঘ এবং বাংলাদেশের অংশীদারিত্বে এবং সহযোগিতায় জোর দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ.কে আব্দুল মোমেন।
আজ যমুনা গেস্ট হাউজে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পোর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎকালে তিনি একথা জানান।
বৈঠক চলাকালীন সময়ে দারিদ্র নিরসন, মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস, মহিলা ক্ষমতায়ন এবং অন্যান্য আর্থ-সামাজিক খাতসহ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতির দিকটি তুলে ধরেন।
তিনি জানান, বাংলাদেশে করোনার প্রকোপ বেশি সত্ত্বেও এসডিজি বাস্তবায়নের দ্বিতীয় সেচ্ছাসেবী প্রতিবেদন যথাসময়ে জমা দিতে সক্ষম হন। তবে করোনা এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। চলমান এ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে তিনি জাতিসংঘের অংশীদারিত্বের উপর আবারোও জোর দেন।
বাংলাদেশের প্রধান দুটি খাত-তৈরি পোশাক শিল্প ও রেমিট্যান্স এর উপর নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কা করে বিদেশ ফেরত শ্রমিকদের পুনরায় দক্ষতা বৃদ্ধি,কর্মসংস্থান এবং পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্যে জাতিসংঘের কাছে সহায়তা চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ সময় তিনি বাংলাদেশের বৃহৎ জনসংখ্যার দিক বিবেচনা করে জাতিসংঘের রেসপন্স ও রিকোভারি তহবিল থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বরাদ্দের আশা ব্যক্ত করেন।
এছাড়াও পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্থের দিক তুলে ধরেন এবং
প্যারিস চুক্তির আলোকে জলবায়ু নিরসনে উন্নত দেশগুলোর দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে বলেন, ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ)এর প্রধান হিসাবে জলবায়ু সংক্রান্ত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে কাজ করবে বাংলাদেশ।পাশাপাশি বৈশ্বিক জলবায়ু অভিযোজন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার জন্যে জাতিসংঘের সমর্থন চেয়েছেন।
জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি সেপ্পো বলেন, জলবায়ু নিরসনে বাংলাদেশের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।
অন্যদিকে, রোহিঙ্গা বিষয়ক সহায়তার জন্যে জাতিসংঘকে ধন্যবাদ জানান মন্ত্রী এবং সেই সাথে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় গভীর উদ্যেগ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে চলমান রোহিঙ্গা নির্যাতন, সেনাবাহিনী টহল রোহিঙ্গাদের দেশত্যাগে বাধ্য করছে ফলে রোহিঙ্গারা নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্থলপথ ও সমুদ্রপথে বিপদজনক যাত্রা করছে,যা অত্যন্ত ভয়াবহ।
তিনি জাতিসংঘের কাছে রাখাইনে প্রত্যাবাসন সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টিতে মিয়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টির আহবান জানান।
বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তুলে ধরে জাতিসংঘের এজেন্সিগুলি কীভাবে কার্যকরভাবে বাংলাদেশের সাথে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে অংশীদার হতে পারে সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়ায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানায় জাতিসংঘ দলটি।
তারা জানায়,বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে যোগদানের পর থেকে জাতিসংঘের এজেন্সিগুলো বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গঠনমূলকভাবে নিয়োজিত রয়েছে।
করোনাভাইরাস এর আর্থ-সামাজিক ধাক্কা কাটিয়ে ওঠতে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে সার্বিক সহায়তা দেবে এবং রোহিঙ্গা বিষয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আরও গঠনমূলক কাজ করার প্রতিশ্রুতিও ব্যক্ত করেন জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি সেপ্পো।
বিএন নিউজ/খাদিজা জাহান