ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ ভাদ্র ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

দুবাইয়ে ড্যান্স ক্লাবের আড়ালে নারী পাচার, সিআইডি'র হাতে ৩ জন


প্রকাশ: ১১ জুলাই, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন


দুবাইয়ে ড্যান্স ক্লাবের আড়ালে নারী পাচার, সিআইডি'র হাতে ৩ জন

   

স্টাফ রিপোর্টার : দুবাইয়ে পাঁচ তারকা হোটেলে চাকরি দেয়ার কথা বলে নারী পাচার চক্রের গডফাদার আজমসহ তার ২ সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) একটি দল।

আজ রোববার (১২ জুলাই) বেলা পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সিআইডির ডিআইজি ইমতিয়াজ আহমেদ।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- আজম খান ও তার দুই সহযোগী আল আমিন হোসেন ডায়মন্ড এবং আনোয়ার হোসেন ময়না।

গ্রেফতারকৃরা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে নারীদের লোভনীয় প্রস্তাব দিয়ে তাদের অগ্রীম টাকা দিয়ে দুবাইয়ে নিয়ে শারীরিক মানসিক নির্যাতন করার এক পর্যায়ে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করত।

সিআইডির ডিআইজি ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, আজম খানের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়িতে। তার বাবা দুবাইয়ে থাকতেন। তিনি ১৯৯৬ সালে দুবাইয়ে চলে যান। দুবাইয়ে তার চারটি তারকাযুক্ত হোটেলের অংশীদার রয়েছে। 

হোটেলগুলোর মধ্যে রয়েছে- ফরচুন পার্ল হোটেল এন্ড ড্যান্স ক্লাব, হোটেল রয়েল ফরচুন, হোটেল ফরচুন গ্রান্ড এবং হোটেল সিটি টাওয়ার। তিনি (আজম খান) গত আট বছর ধরে নারী পাচারের ব্যবসায় জড়িত হয়েছেন।

সিআইডির ডিআইজি বলেন, কিছুদিন আগে দুবাই সরকারের অভিযোগের ভিত্তিতে আজম খানের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়। পরে তাকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়। আজম খান দেশে এসে নতুন পাসপোর্ট তৈরি করে দেশের সীমান্ত এলাকা দিয়ে অন্য কোন দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।

ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, আজম খান নারী পাচার চক্রের মূল হোতা। এসব হোটেলগুলোতে কাজের নামে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পাচার করা অল্পবয়সী সুন্দরী তরুণীদের যৌনকাজে বাধ্য করত। আজম খানের সহযোগী আল আমিন হোসেন ওরফে ডায়মন্ডসহ আরও অনেক ড্যান্স প্রশিক্ষণ দিয়ে তরুণীদের বিদেশে মোটা অংকের বেতনের প্রভোলন দেখাতো। পরে চাহিদামতো এসব তরুণীদের তারা দুবাইয়ে পাচারের ব্যবস্থা করত। 

সেখানে পৌঁছানোর পর আজম খানের মালিকানাধীন ড্যান্স ক্লাবগুলোতে আটক রেখে চলত যৌন নির্যাতন ও নিপীড়ন। তাদেরকে (ভুক্তভোগী) মাসে ৫০ হাজার টাকা বেতন দেয়ার কথা বললেও তাদেরকে কোন টাকা দেওয়া হতো না। 

এসব ঘটনায় আসামিদের জড়িত থ্কাার সকল অডিও ক্লিপ সংগ্রহ করেছে সিআইডি। আজম খান গত আট বছরে প্রায় এক হাজার তরুণীকে দুবাইয়ে পাচার করেছে।

ইমতিয়াজ আহমেদ আরও বলেন, আজম খানের বাংলাদেশে ৫০ জনের মত দালাল (ট্রাভেল এজেন্সি) সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। তিনি ওই দালালদের মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে অল্পবয়সী নারীদের বিদেশে ভালো চাকরি দেয়ার প্রভোলন দেখাত। পরে তাদের ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকার মত দিয়ে দুবাইয়ে নিয়ে তার বিভিন্ন হোটেলে চাকরি দিত। 

এক পর্যায়ে তাদেরকে তার ড্যান্সবারে নাচার জন্য বলত। কোন কোন সময়ে তাদের হোটেলে ওই তরুণীদের দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা হতো। ওই নারীরা রাজি না হলে তাদেরকে খেতে না দিয়ে মারধর করে আবার কোন কোন সময়ে তাদেরকে বৈদ্যুতিক শক দেয়া হতো।

সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, অপরাধের যতগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে তার সবকিছুর মধ্যেই তিনি (আজম খান) জড়িত। বাংলাদেশেও আজম খানের বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা রয়েছে। তার মধ্যে ৬টি হত্যা মামলা। তার বিরুদ্ধে গত ২ জুলাই সিআইডি বাদী হয়ে লালবাগ থানায় একটি মামলা করেন।


   আরও সংবাদ