প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ১৪:০০ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস এলাকায় তিনটি দোকানে অভিযান চালিয়ে রোহিঙ্গা, সাজাপ্রাপ্ত ও ফেরারী আসামী, দাগী অপরাধীদের জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট সরবরাহ করে পাসপোর্ট গ্রহণে সহায়তাকারী চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-২।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে র্যাব-২'এর কোম্পানি কমান্ডার এসপি মহিউদ্দিন ফারুকী বিএননিউজকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, আজ দুপুর ৩ টা থেকে এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
আটককৃতরা হলেন- নারায়ণগঞ্জের ফজলুল করিম (৩৩), সাইফুল ইসলাম (২৪), আজিম হোসেন (২৬), নেত্রকোনার একটি ইউপির উদ্যোক্তা সদস্য মামুন মিয়া (৩৫), ঢাকার একটি সিটি কর্পোরেশন এর মাঈন উদ্দিন(৩৮) ও জাহাঙ্গীর (৩৬)।
এসময় তাদের কাছ থেকে অবৈধভাবে জন্ম সনদ প্রদান কার্যে লেনদেনকৃত দুই লক্ষাধিক টাকা, ৪ টি ল্যাপটপ ও প্রচুর সরঞ্জামাদিসহ সিটি কর্পোরেশন, ভুয়া জন্ম নিবন্ধন সীল, সনদের হার্ড কপি ও সফট কপির হার্ডডিস্ক উদ্ধার করা হয়েছে।
মহিউদ্দিন ফারুকী জানান, পাঁচ হাজার টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা বিনিময়ে সিটি করপোরেশন ও দেশের বিভিন্ন জেলার বেশ ক'টি ইউনিয়ন পরিষদের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে রোহিঙ্গা, সাজাপ্রাপ্ত ও ফেরারী আসামী, দাগী অপরাধী, বয়স কম-বেশী দেখিয়ে বিদেশ যাবার জন্য আগ্রহী লোকজন এর নামে জন্ম সনদ তৈরী করে দেয়।
তিনি আরো বলেন, পরবর্তীতে তারা পাসপোর্টের জন্য আবেদন করলে পাসপোর্ট আবেদনকারীদের জন্ম সনদের তথ্য ভান্ডারে থাকা তথ্যের মিল থাকায় পাসপোর্ট পেয়ে যেতো। সাজাপ্রাপ্ত আসামি তার নাম, বাবার নাম, বয়স, ঠিকানা পরিবর্তন করে পাসপোর্ট করলে তাদেরকে বিমান বন্দরে আটকানো যেতো না।
মহিউদ্দিন ফারুকী বলেন, আমরা জানতে পেরেছি এই প্রক্রিয়ায় ভুয়া তথ্যে দেশের বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে ১৩ থেকে ১৪ জন রোহিঙ্গা জন্ম সনদ নিয়েছে।
অভিযানকালে আসামীদের নিকট হতে জব্দকৃত ও তাদের কম্পিউটারে রক্ষিত এসব জন্ম সনদ নিবন্ধিত অর্থাৎ আসল। যাদের নামে জন্ম সনদগুলো তৈরী করা হয়েছে জন্ম সনদ গ্রহণকারী লোকগুলো সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দা নন।
তিনি বলেন, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ও উদ্যোক্তা সদস্য, সিটি করপোরেশনের নিবন্ধন কর্মকর্তা-কর্মচারী, জেলা পরিষদ ও বিভিন্ন উপজেলা পরিষদের জন্ম মৃত্যু রেজিষ্ট্রেশন কার্যালয়ের কর্মচারীদের যোগসাজশে জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট ন্যাশনাল সার্ভার হতে তৈরী করে সরবরাহ করতো।
এদের নিকট হতে জব্দকৃত কম্পিউটার ও ল্যাপটপের হার্ডডিস্ক চেক করে অধিক জন্ম সনদ ও হার্ড কপি পেয়েছে যার পরিমাণ ২৫ হাজারের অধিক।
আটককৃত আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা রোহিঙ্গাদেরকেও এসব জন্ম সনদ তৈরী করে দিয়ে পাসপোর্ট তৈরীতে সহায়তা করে। ইতিমধ্যে তারা ১৩/১৪ জন রোহিঙ্গাকে জন্ম সনদ তৈরী করে পাসপোর্ট করে দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করার পর তাদের নিকট থেকে তথ্য প্রমাণ জব্দ করা হয়।