প্রকাশ: ৭ মে, ২০১৯ ১৪:০০ অপরাহ্ন
নিউজ ডেস্ক: ফ্রান্সে জ্বালানি তেলের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপসহ ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে শুরু হওয়া 'ইয়েলো ভেস্ট' আন্দোলন ২৩ সপ্তাহের মত চলছে ।প্রথম অবস্হায় রাজধানী প্যারিস থেকে শুরু হলেও ধীরে ধীরে এ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে সমস্ত ফ্রান্সে। ইতোমধ্যে এ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে প্রায় আড়াই লাখের বেশি হলুদ জ্যাকেট পরিহিত জনগণ।
শনিবার (২০ এপ্রিল) দাবী দাওয়া সম্বলিত ব্যানার ফেষ্টুন নিয়ে রাজপথে নামলে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে এবার কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করেছে ফ্রান্সের দাঙ্গা পুলিশ।
বার্তা সংস্থা ‘রয়টার্স’ জানায়, রবিবার (২০ এপ্রিল) উভয়পক্ষ যখন সেন্ট্রাল প্যারিসে এসে মুখোমুখি হয় তখন সেখানকার পরিস্থিতি ভীষণ বিশৃঙ্খল অবস্থাতে ছিল। আর সে সময় বিক্ষোভকারীরা সড়কের বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগ করতে থাকে। মূলত তখন তাদের এই কাজ থেকে বিরত রাখা এবং ছত্রভঙ্গ করতে এমন কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়তে বাধ্য হয় পুলিশ।
বিক্ষোভকারীদের ধারণকৃত এক ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, এ দিন প্যারিসের আকাশে ভারী কালো ধোঁয়া উঠে যাচ্ছে। তখন বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ সদস্যরা জল কামান ব্যবহার করছেন। আর এতে তারা দিক-বিদিক দৌড়ে পালাচ্ছেন।
প্যারিস পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত অন্তত ১৮২ জন হলুদ জ্যাকেটধারী বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমানে তারা সকলেই পুলিশি হেফাজতে আছেন। এর আগে গত সপ্তাহে দেশটির ৮৫০ বছর পুরনো ঐতিহাসিক নটরডেম গির্জায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। মূলত ভয়াবহ এ অগ্নিকাণ্ডের পর হলুদ জ্যাকেটধারীদের এটিই প্রথম বিক্ষোভ।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি, গোটা দেশ জুড়ে এখন পর্যন্ত প্রায় ২৮ হাজারের বেশি বিক্ষোভকারী এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। যার মধ্যে রাজধানী প্যারিসেই কেবল নয় হাজারের অধিক লোক বিক্ষোভে সমবেত হয়েছে।
‘রয়টার্স’ জানায়, ফ্রান্সে বিভিন্ন অর্থনৈতিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে চলমান এই বিক্ষোভে আগত লোকজন এ দিন সরকার বিরোধী নানা স্লোগান, গান এবং বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে এটিকে মুখরিত করে তোলেন। এ সময় অনেক বিক্ষোভকারী অভিযোগ করে বলেন, ‘নটরডেম গির্জা পুনর্নির্মাণের জন্য লাখ লাখ ডলার অনুদান উঠছে; কিন্তু আমাদের এই দাবিগুলো মেনে নেওয়ার ব্যাপারে কারও কোনো চিন্তাই নেই। আর এটাই দেশে বিদ্যমান বৈষম্যকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।’
তখন বিক্ষোভে অংশ নেওয়া লোকদের হাতে ‘সবকিছু নটরডেমের জন্য, দুর্দশাগ্রস্তদের জন্য কি কিছুই নয়’ এমন স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ডও দেখা যায়। আরেকটি প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘আমরা সবাই গির্জা, আমাদের সাহায্য করুন।’
এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি এবং পেনশন ট্যাক্স সংশোধনের দাবিতে শুরু হয় এই বিক্ষোভ। যদিও গত ছয় মাস যাবত ফ্রান্সের বিভিন্ন শহরে একের পর এক বিক্ষোভ কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়। যা বর্তমানে অনেক বড় আকার ধারণ করেছে।