ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ ভাদ্র ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদকে গ্রেফতারে কলঙ্ক মুক্ত হচ্ছে ভোলাবাসী


প্রকাশ: ৬ এপ্রিল, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন


বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদকে গ্রেফতারে কলঙ্ক মুক্ত হচ্ছে ভোলাবাসী

   

বোরহানউদ্দিন (ভোলা) প্রতিনিধি : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্ম স্বীকৃত খুনি ক্যাপ্টেন মাজেদকে গ্রেফতার করেছে আইন শৃংখলা বাহিনী। এমন সংবাদ মঙ্গলবার সকালে দ্বীপ জেলায় ছড়িয়ে পড়ে মিডিয়ার কল্যাণে। এমন খবর শুনার সাথে সাথেই আনন্দিত ও উল্লাসিত হয়ে পড়েন তার জন্মস্থান বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড় মানিকা ইউনিয়ন বাসি। 

করোনা পরিস্থিতির কারণে তাদের আনন্দের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে পারেনি তারা এমন কথা বলে অনেকে দুঃখ প্রকাশ করেন। উল্লাসিত অনেকে এই বিশ্বাসঘাতকের দ্রুত ফাঁসি দাবি করেন সরকারের কাছে।

জানা যায়, রাজধানীর মিরপুর সাড়ে ১১ থেকে ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল মাজেদকে পুলিশ গ্রেফতার করে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

ভোলা -২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আত্নস্বীকৃত খুনি,ফাসিঁর আসামি,কুখ্যাত নরপিচাশ  ক্যাপ্টেন মাজেদ এর গ্রেফতারের সংবাদ শুনে আজ সারা বাংলার জনগন আনন্দিত। আমিও আনন্দিত। বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কারণে এই আনন্দের বহিঃপ্রকাশ করতে পারছেন না।   এই কুখ্যাত খুনির গ্রেফতারের মধ্যে দিয়ে ভোলাবাসী আজ কলঙ্গমুক্ত হতে যাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার আকুল আবেদন অতি দ্রুত তার ফাসিঁর রায় কার্যকরের  মাধ্যমে আমাদেরকে কলঙ্কমুক্ত করবেন। তিনি বলেন সকাল থেকে মোবাইলে শত শত মানুষ ফোন করে তাদের স্বস্তির নিঃশ্বাস আমাকে জানিয়েছেন। এই নরপিশাচের গ্রেফতারের সংবাদ শুনে আমি খুবই আনন্দিত হয়েছি।

পাশাপাশি বিশ্বমানবতার মাকে আমি বিনয়ের সাথে অনুরোধ করবো তার ফাঁসির রায় দ্রুত কার্যকর করতে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেঁচে আছে বলেই এই বাংলায় আজ অত্যাচারী,নরপিশাচদের বিচার হচ্ছে। আমি আশা করছি জাতির পিতার আত্নস্বীকৃত খুনি ক্যাপ্টেন মাজেদকে ফাঁসি দিয়ে বাংলাদেশকে কলঙ্কমুক্ত করা হবে। পাশাপাশি যে সমস্ত খুনিরা এখনও বিদেশে আছেন তাদেরকে দেশে ফিরিযে এনে রায় কার্যকরেরও আহবান জানান। খুনি মাজেদ এর গ্রেফতারে আমি আনন্দে আত্নহারা। মঙ্গলবার দুপুরে বোরহানউদ্দিন উপজেলায় তার নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদেরকে এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানান, ভোলা জেলার  বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড় মানিকা ইউনিয়নের উত্তর বাটামারা গ্রামের ৫নং ওয়ার্ডে ক্যাপ্টেন মাজেদ জন্মগ্রহন করেন।পিতা আলী মিয়া। ৪ ভাই ৩ বোনের মধ্যে   ক্যাপ্টেন মাজেদ ভাইদের মধ্যে তৃতীয়। ২য় ভাই আব্দুল মজিদ ছাড়া সবাই জীবিত। এলাকাবাসী জানান, ছোট বেলা থেকেই মাজেদ ছিলেন বেশ ডানপিঠে। কে জানত? এই মাজেদই  একদিন হবে জাতির পিতার খুনি। হবে বাঙ্গালী জাতির চরম বিশ্বাসঘাতকদের একজন।

নাম প্রকাশ  না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানান, বাংলার এই মীরজাফর ও কুলাঙ্গারকে আগে আগেই গ্রেফতার করে ফাসিঁর কার্যকর করা উচিত ছিল। তার সকল সম্পত্তি রাষ্ট্রিয় নিয়ন্ত্রণে দেওয়ার দাবী করেন।অনেকে বলেন করোনা পরিস্থিতির কারণে আমরা আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করতে পারিনি। তবে রায় দ্রুতই কার্যকরের দাবী জানাচ্ছি।

ওই ওয়ার্ডের মেম্বার জাকির হোসেন বলেন, আজ আমরা খুবই আনন্দিত। এলাকায় আমরা মিষ্টি খাইছি। আমাদের আত্বার শান্তি পাইছি। বাংলা বাজার ফাতেমা খানম কলেজের প্রভাষক মাওলানা সহিদ উল্যাহ জানান, ক্যাপ্টেন মাজেদ বাংলাদেশের স্থপতিকে হত্যা করেন। খুনের সাজা খুনই হওয়া উচিত। এ গ্রেফতারের খবরে আমরা মহাখুশি।

বড় মানিকা ইউনিয়ন আ’লীগ সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন বাবর জানান, মাজেদ সমগ্র বাঙ্গালী জাতির সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছে। আমি ওনার দ্রুত ফাঁর্সির দাবি করছি।

সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ইঞ্জিনিয়ার আহমদ উল্যাহ বলেন, ক্যাপ্টেন মাজেদ শুধু জাতির জনককে হত্যা করেনি। হত্যা করেছে আমার দেশ ও বাঙ্গালী জাতিকে। এই নরপিচাশ এর গ্রেফতারে আমি আনন্দিত। ওর ফাঁসি দ্রুত বাস্তবায়ন করার আহবান জানাচ্ছি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পলাতক ছয় খুনির মধ্যে তিনি অন্যতম। পলাতক বাকি ছয় খুনিরা হলো আব্দুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম, এম রাশেদ চৌধুরী, এসএইচএমবি নূর চৌধুরী, আব্দুল মাজেদ ও রিসালদার মোসলেম উদ্দিন।

ক্যাপ্টেন ( অব) আব্দুল মাজেদ এর বাড়ি ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড় মানিকা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডে।


   আরও সংবাদ