ঢাকা, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ ভাদ্র ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

৮ আগস্ট থেকে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসিতে ফের অভিযান শুরু


প্রকাশ: ৬ অগাস্ট, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন


৮ আগস্ট থেকে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসিতে ফের অভিযান শুরু

   

স্টাফ রিপোর্টার : এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ডেঙ্গু থেকে নগরবাসীকে সুরক্ষা দিতে আগামীকাল শনিবার (৮ আগস্ট) থে‌কে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) উদ্যোগে প্রতিটি ওয়ার্ডে আবারও বিশেষ পরিছন্নতা অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে। 

এবারের চিরুনি অভিযান আগামীকাল ৮ আগস্ট থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত ১০দিন চলমান থাকবে। ত‌বে আগামী ১১ আগস্ট জন্মাষ্টমী, ১৪ আগস্ট শুক্রবার এবং ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে চিরুনি অভিযান বন্ধ থাকবে। অ‌ভিযানের কার্যক্রম সকাল ১০টা হ‌তে ১২-৩০ টা পর্যন্ত চলমান থাকবে। 

তবে অঞ্চল বা ওয়ার্ডভেদে প্রতিদিনের চিরুনি অভিযান শুরু ও শেষ করার সময় পরিবর্তন হ‌তে পা‌রে। ডেঙ্গু সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং আগামীকাল থেকে অনুষ্ঠেয় চিরুনি অভিযান সম্পর্কে নগরবাসীকে অবহিত করতে ইতিমধ্যে ডিএনসিসির সর্বত্র মাইকিং করা হয়েছে।

চিরুনি অভিযান সর্বাত্মকভাবে সফল করতে ডিএনসিসি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম ওয়ার্ড কাউন্সিলর, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর, গণমাধ্যম কর্মীগণ এবং ডিএনসিসির সর্বস্তরের জনগণকে আহবান জানান। তিনি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের স্থাপনার ভেতরে-বাইরে, আশেপাশে তিন দিনের বেশি জমা পানি থাকবে, ততদিন পর্যন্ত আমরা ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষিত নই। 

নগরবাসীর প্রতি আমার আহ্বান, বাড়ি বা স্থাপনার ভেতরে, বাইরে, আশেপাশে কোথাও পানি জমে থাকলে এক্ষুনি ফেলে দিন। তিন দিনে এক দিন, জমা পানি ফেলে দিন। ডেঙ্গু থেকে আপনি সুরক্ষিত থাকুন, আপনার পরিবার, শহর ও রাষ্ট্রকে সুরক্ষিত রাখুন।

ইতিপূর্বে পরিচালিত চিরুনি অভিযানের মতো এই চিরুনি অভিযান পরিচালনার উদ্দেশে প্রতিটি ওয়ার্ডকে ১০টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। আবার প্রতিটি সেক্টরকে ১০টি সাবসেক্টরে ভাগ করা হয়। প্রতিদিন প্রতিটি ওয়ার্ডের ১টি সেক্টরে অর্থ্যাৎ ১০টি সাবসেক্টরে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে। এভাবে আগামী ১০দিনে সমগ্র ডিএনসিসিতে চিরুনি অভিযান সম্পন্ন করা হবে। 

প্রতিটি সাবসেক্টরে ডিএনসিসির ৪ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও ১ জন মশক নিধনকর্মী, অর্থাৎ প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রতিদিন ৪০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও ১০ জন মশককর্মী ডিএনসিসির আওতাধীন বিভিন্ন বাড়ি, স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠানে গিয়ে কোথাও এডিস মশার লার্ভা আছে কিনা, কিংবা কোথাও তিন দিনের বেশি পানি জমে আছে কিনা, কিংবা ময়লা-আবর্জনা আছে কিনা, যা এডিস মশার বংশবিস্তারে সহায়ক, তা পরীক্ষা করবেন। চিরুনি অভিযান চলাকালে ডিএনসিসির ৩ জন কীটতত্ববিদ, স্বাস্থ্য বিভাগ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তাগণ দিকনির্দেশনা দেবেন। এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ৯জন কীটতত্ববিদ এবং ৬জন চিকিৎসক ডিএনসিসির সাথে কাজ করবে।

পূর্বের চিরুনি অভিযানের ন্যায় এই চিরুনি অভিযান চলাকালে যেসব বাড়ি বা স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা কিংবা এডিস মশা বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যাবে, তার ছবি, ঠিকানা, মোবাইল নম্বরসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে একটি অ্যাপে সংরক্ষণ করা হবে। এর ফলে চিরুনি অভিযান শেষে ডিএনসিসির কোন কোন এলাকায় এডিস মশা বংশবিস্তার করে তার একটি ডাটাবেস তৈরি হবে। ডাটাবেস অনুযায়ী পরবর্তীতেও তাদেরকে মনিটর করা হবে।
 
চিরুনি অভিযানের সাথে সাথে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্টও পরিচালিত হবে। 

উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে ১৬-২০ মে পরিচালিত চিরুনি অভিযানে ৯ হাজার ৪৬৩টি স্থাপনা পরিদর্শন করে ১৮৭টিতে এডিসের লার্ভা পাওয়া যায়। এডিসের লার্ভা পাওয়ায় এ সময় ৪ লক্ষ ৫৮ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা করা হয়। পরবর্তীতে ৬-১৪ জুন অনুষ্ঠিত চিরুনি অভিযানে ডিএনসিসির ১ লক্ষ ৩৪ হাজার ১৩৫ টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ১ হাজার ৬০১টি বাড়িতে এডিসের লার্ভা পাওয়া যায়। 

এডিসের লার্ভা পাওয়ায় সে সময় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ২১ লক্ষ ৮৫ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। সর্বশেষ ৪ থেকে ১৪ জুলাই অনুষ্ঠিত পরিচালিত চিরুনি অভিযানে ১ লক্ষ ৩০ হাজার ৯৭৮টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ৮৯৮টিতে এডিসের লার্ভা পাওয়া যায়। এডিসের লার্ভা পাওয়ায় সেসময় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ২১ লক্ষ ৬৮ হাজার ৭১০ টাকা জরিমানা করা হয়।

চলতি বছরে চিরুনি অভিযানের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ২ লক্ষ ৭৪ হাজার ৫৭৬টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ২ হাজার ৬৮৬টিতে এডিসের লার্ভা পাওয়া যায়। এডিসের লার্ভা পাওয়ায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ৪৮ লক্ষ ১২ হাজার ৫১০ টাকা জরিমানা করা হয়।


   আরও সংবাদ