ঢাকা, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ ভাদ্র ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ডিএনসিসির ৩য় পর্যায়ের চিরুনি অভিযানে লার্ভা মিলেছে ৮৭টি স্থাপনায়, জরিমানা প্রায় দেড় লাখ


প্রকাশ: ৭ অগাস্ট, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন


ডিএনসিসির ৩য় পর্যায়ের চিরুনি অভিযানে লার্ভা মিলেছে ৮৭টি স্থাপনায়, জরিমানা প্রায় দেড় লাখ

   

স্টাফ রিপোর্টার : এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নগরবাসীকে ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষা দিতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী বছরব্যাপী মশকনিধন কার্যক্রমের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। এরই অংশ হিসাবে কয়েকটি পর্যায়ে বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। গত ৬-১৫ জুন প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের সফল চিরুনি অভিযান শেষ হয় ৪-১৪ জুলাই। আজ সকাল থেকে তৃতীয় পর্যায়ের ১০ দিনব্যপী চিরুনি অভিযান শুরু হয়েছে। চিরুনি অভিযান চলাকালে ভ্রাম্যমাণ আদালত আরও জোরদার করা হয়েছে। যেসব ক্ষেত্রে ভবন বা স্থাপনার মালিক পাওয়া যাবে না, সেসব ক্ষেত্রে প্রয়োজনে নিয়মিত মামলা করা হবে। 

আজ শনিবার (৮ আগস্ট) সকাল ১০টা থেকে তৃতীয় পর্যায়ের ১০ দিনব্যাপী বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযানের প্রথম দিনে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) ৫৪টি ওয়ার্ডে একযোগে বিশেষ এই পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালিত হয়েছে। 

আজ মোট ১২ হাজার ৭৩৬ টি বাড়ি, স্থাপনা ও নির্মাণাধীন ভবন পরিদর্শন করে মোট ৮৭ টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। এছাড়া ৭ হাজার ৩০১ টি স্থাপনায় এডিস মশা বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। এসময় ২০টি মামলায় মোট এক লক্ষ ২৮ হাজার ৬০০টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে এবং অন্যান্য বাড়ি ও স্থাপনার মালিককে সতর্ক করা হয়েছে।

আজ উত্তরা অঞ্চল-১ এর অধীনে মোট ৭৯৮টি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ১২ টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলে ৬টি মামলায় মোট ১৪ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া ৬৮৭টি স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।

মিরপুর অঞ্চল-২ এর অধীনে মোট ২হাজার ৪১৭টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ৩ টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায় এবং ২৩৫ টি বাড়ি ও স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে মাস্ক ব্যবহার না করার জন্য ৫টি মামলায় মোট ৬০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। 
 
মহাখালী, অঞ্চল-৩ এর অধীনে মোট ১ হাজার ৬১৪ টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ৩৮ টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায় এবং ৯৭৫ টি বাড়ি ও স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। এসময়ে ৪টি মামলায় মোট ৯০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। 

মিরপুর ১০, অঞ্চল-৪ এর অধীনে মোট ১হাজার ৫২৬টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ৮টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলে ২টি মামলায় মোট ১হাজার ৫০০টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এছাড়া ৬২৫টি বাড়ি ও স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।  

কারওয়ান বাজার, অঞ্চল-৫ এর অধীনে মোট ২ হাজার ১৬১টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ৭টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। এছাড়া ১ হাজার ৬৪৪টি বাড়ি ও স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। 

হরিরামপুর, অঞ্চল-৬ এর অধীনে মোট ১হাজার ৩৯০ টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ১০ টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। এছাড়া ১হাজার ১৩৮ টি বাড়ি ও স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। 

দক্ষিণখান অঞ্চল-৭ এর অধীনে মোট ৮৮৬টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ২ টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। এছাড়া ৬৯৩ টি বাড়ি ও স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। 

উত্তরখান অঞ্চল-৮ এর অধীনে মোট ৭৪৩ টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ২টি স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা পাওয়া  যায় এবং ৪৬৮ টি বাড়ি ও স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। 

ভাটারা অঞ্চল-৯ এর অধীনে মোট ৪৯১ টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ৫ টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। এবং ২৮৯ টি বাড়ি ও স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। 

সাঁতারকুল অঞ্চল-১০ এর অধীনে মোট ৭১০টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে কোন এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়নি। তবে এসময়ে ৫০৭টি বাড়ি ও স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। উল্লিখিত সকল সম্ভাব্য এডিস মশার প্রজন স্থলে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনাপূর্বক কীটনাশক ছিটানো হয়েছে এবং জনসাধারণকে এবিষয়ে পরবর্তীতে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

তৃতীয় ধাপে চিরুনি অভিযান পরিচালনার লক্ষ্যে এবারও প্রতিটি ওয়ার্ডকে ১০টি সেক্টরে ভাগ করে প্রতিটি সেক্টরকে ১০টি সাবসেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিদিন প্রতিটি ওয়ার্ডের ১টি সেক্টরে অর্থ্যাৎ ১০টি সাবসেক্টরে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে। দীর্ঘমেয়াদি আধুনিক মশক নিধন ব্যবস্থাপনার অংশ হিসাবে বিগতবারের ন্যায় এবারও এডিসের লার্ভা প্রাপ্তির স্থানসমূহ এবং প্রজনন উপযোগী পরিবেশসমূহের তথ্য অ্যাপে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। 

উল্লেখ্য, প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের অভিযানে মোট ২লক্ষ ৭৪ হাজার ৫৭৬টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ২হাজার ৬৮৬টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায় এবং সর্বমোট ৪৮লক্ষ ১২হাজার ৫১০টাকা জরিমানা করা হয়েছিলো। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নগরবাসীকে ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষা দিতে ডিএনসিসির চিরুনি অভিযান আগামীকালও অব্যাহত থাকবে।


   আরও সংবাদ