ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ ভাদ্র ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুর জীবন থেকে অনুপ্রারিত হয়ে দেশ গঠনের আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত জসীম উদ্দিন


প্রকাশ: ১৫ অগাস্ট, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন


মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুর জীবন থেকে অনুপ্রারিত হয়ে দেশ গঠনের আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত জসীম উদ্দিন

   

কূটনৈতিক প্রতিবেদক : গ্রীসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জসীম উদ্দিন বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা এবং আদর্শ বাস্তবায়নে নতুন প্রজন্মসহ সকলকে এগিয়ে আসারও আহবান জানিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের প্রতীক। তিনি এই মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুর জীবন থেকে অনুপ্রারিত হয়ে দেশ গঠনে উদ্বুদ্ধ হতে সকলকে আহ্বান জানান।  

শনিবার (১৫ আগস্ট) সকালে গ্রীসস্থ দূতাবাস প্রাঙ্গণে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জসীম উদ্দিন কর্তৃক জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে অর্ধনমিতকরণের মধ্য দিয়ে শোক দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত। গ্রীস প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনও জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। বঙ্গবন্ধু ও ১৫ই আগস্টের শহীদদের আত্মার মাগফেরাত এবং দেশ ও জাতির উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। দূতাবাস প্রাঙ্গণে সকাল থেকেই পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করা হয়।

তিনি বলেন, তিনি শুধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টাই নন, স্বাধীনতা উত্তর আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের জন্য স্বীকৃতি আদায়ে তাঁর প্রাজ্ঞ রাষ্ট্রনীতি ও কূটনীতি তাঁকে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নেতার মর্যাদায় আসীন করেছে। রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীর রূপকল্প-২০২১ এবং রূপকল্প-২০৪১ এর লক্ষ্য অর্জনের মধ্য দিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশীদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সোনার বাংলার গড়ার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানান। 

বাংলাদেশের অব্যাহত উন্নয়নের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি গ্রীসে বাসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে যোগ দেওয়া আহবান জানান। রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে করোনা পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর পরিবর্তিত কর্মসূচীতে অংশ নিতে প্রবাসী বাংলাদেশীদের আহবান জানান।

বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশীর অংশগ্রহণে বিনম্র শ্রদ্ধা, যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে এথেন্সের বাংলাদেশ দূতাবাসে জাতীয় শোক দিবস-২০২০ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাৎ বার্ষিকী পালিত হয়েছে। মুজিববর্ষে এই শোকদিবস জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো এবং তাঁর চেতনায় উদ্বুদ্ধ হবার অনন্য সুযোগ হিসেবে নিয়ে সর্বস্তরের প্রবাসী বাংলাদেশীগণ অংশগ্রহণ করে। করোনা পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে শোক দিবসের পালন করা হয়। 

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দূতাবাস চত্বরে বঙ্গবন্ধুর মহতী কর্মময় জীবনের আলোকচিত্র এবং বঙ্গবন্ধুর অমূল্য বাণীর সপ্তাহব্যাপী প্রদর্শনী আয়োজন করা হয়।  এই প্রদর্শনীতে স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময় থেকে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক জীবনের বিশেষত যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠন ও বিশ্ব অঙ্গনে বঙ্গবন্ধুর সক্রিয় কূটনৈতিক উদ্যোগ ও কর্ম তৎপরতার চিত্র তুলে ধরা হয়।  পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে প্রদত্ত বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণসমূহ থেকে তাঁর স্মরণীয় কিছু বাণীও প্রদর্শন করা হয়। 

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এই আলোকচিত্র প্রদর্শনী এবং তাঁর অমূল্য বাণীর সংযোজন অনুষ্ঠানে যোগদানকারী বিপুল সংখ্যক দর্শকের ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করে। প্রবাসে বেড়ে উঠা নতুন প্রজন্মের শিশু-কিশোররা এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে জাতির পিতার মহতী জীবন ও কর্ম সম্পর্কে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছে। দূতাবাস চত্বরে আয়োজিত এই প্রদর্শনী আগামী এক সপ্তাহ দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

১৫ই আগস্ট বিকেলে প্রবাসী বাংলাদেশীদের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রেরিত বাণী পাঠের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়। বঙ্গবন্ধুর গৌরবোজ্জ্বল কর্মময় জীবনের উপর প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শিত হয়। এরপর বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্টের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ ও তিতিক্ষার জীবনাদর্শ ও কর্মের উপর আলোচনায় বক্তাগণ বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার কার্যকর করার দাবি জানান। তাঁরা জাতির পিতার ঐতিহাসিক অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে বলেন যে, ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও তাঁর আদর্শ এবং দর্শনকে হত্যা করতে পারেনি।  বক্তারা বর্তমান সরকারের অধীনে দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ভূয়সী প্রশংসা করেন। মুজিব বর্ষে জাতির পিতার আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে তারা প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

আলোচনা অনুষ্ঠানের পর মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৫ আগস্টের অন্যান্য শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচিতে বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গ্রীসের নেতৃবৃন্দসহ গ্রীসে বসবাসকারী বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ব্যবসায়ী ও আঞ্চলিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি এবং দূতাবাসের কর্মকর্তা, কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।


   আরও সংবাদ