ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ ভাদ্র ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

এলজিআরডি মন্ত্রী ও মেয়রের আমিনবাজার যান্ত্রিক ওয়ার্কশপ ও ল্যান্ডফিল পরিদর্শন


প্রকাশ: ২১ অগাস্ট, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন


এলজিআরডি মন্ত্রী ও মেয়রের আমিনবাজার যান্ত্রিক ওয়ার্কশপ ও ল্যান্ডফিল পরিদর্শন

   

স্টাফ রিপোর্টার : স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী তাজুল ইসলাম এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) আতিকুল ইসলাম আমিনবাজারে অবস্থিত ডিএনসিসির যান্ত্রিক ওয়ার্কশপ এবং ল্যান্ডফিল পরিদর্শন করেন। 

আজ শনিবার (২২ আগস্ট) বেলা ১১টায় আমিনবাজারে ডিএনসিসির পাইকারি কাঁচাবাজারে যান্ত্রিক ওয়ার্কশপ পরিদর্শন করেন এবং পরে আমিনবাজার ল্যান্ডফিল পরিদর্শন করেন।

পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, ডিএনসিসির বিভিন্ন ধরনের আমদানিকৃত যান ও যন্ত্রপাতি সঠিকভাবে ব্যবহার, রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে কিনা, এ বিষয়ে কোন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা, স্ট্রাকচারাল ডিজাইন, অরগানোগ্রাম আছে কিনা তা পরিদর্শন করতে আমি এখানে এসেছি।

মেয়র আতিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ডিএনসিসির এই পাইকারি কাঁচাবাজারে এবং যাত্রাবাড়িতে কাওরান বাজারের কাঁচাবাজার স্থানান্তর করার কথা ছিল। কিন্তু কাজটি আমরা এখনো করতে পারিনি। এখানে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। কাওরান বাজারের ব্যবসায়ীদের সাথে প্রাথমিকভাবে আমরা কথা বলেছি। ব্যবসায়ীদের সাথে আমরা আবারো আলোচনায় বসবো। তারা একেক সময় একেক ধরনের দাবি করছে। কিন্তু দাবিগুলো আমরা লিখিত আকারে পাচ্ছিনা। কাওরান বাজারের মতো এরকম একটা বিশৃঙ্খল মার্কেট ঢাকা শহরে হতে দেওয়া যায় না। কাওরান বাজারকে সুন্দর ডিজাইন অনুযায়ী সাজানো দরকার। 

মেয়র আরো বলেন, আমাদের প্রায় ৪৫০টি বিভিন্ন ধরনের গাড়ি আছে। এর মধ্যে আছে এস্কেভেটর, পানির গাড়ি, ময়লার ডাম্প ট্রাক ইত্যাদি। এগুলো কীভাবে রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে। ময়লা ফেলে আসার পরে এগুলো রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে কিনা। আমরা এসফল্ট প্ল্যান্ট করেছি। আমি ঠিকাদারদের বলে দিয়েছি ভবিষ্যতে এই এসফল্ট প্ল্যান্ট থেকে তাদেরকে ম্যাটেরিয়াল কিনতে হবে। নগরে যে কাজ হবে তার কোয়ালিটি নিশ্চিত করার জন্য এই এসফল্ট প্ল্যান্ট করেছি। 

মেয়র আতিকুল বলেন, কোরবানির ঈদে প্রধানমন্ত্রী আমাকে একটি অনুশাসন দিয়েছেন। গরুর হাটের পাশে একটি মডার্ন স্লটারিং হাউজ করার জন্য। এই অনুশাসনটিকে সর্বোচ্চ প্রায়োরিটি দেওয়া হচ্ছে। গাবতলী গরুর হাটের পাশে আমরা একটি অত্যাধুনিক স্লটারিং হাউজ করবো।

আতিকুল ইসলাম বলেন, ৫২ একর জমি প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক উদ্ধার করেছিলেন। এটি কোথাও কোথাও আবার দখল হয়ে গিয়েছে। এসব জায়গা পূনরুদ্ধার করে, বাউন্ডারি ওয়াল করে এখানে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করা হবে। 

যান্ত্রিক ওয়ার্কশপ পরিদর্শন শেষে মন্ত্রী ও মেয়র আমিনবাজার ল্যান্ডফিল পরিদর্শনে যান।
পরিদর্শন শেষে মন্ত্রী বলেন, আমিন বাজারে নির্মিতব্য দেশের প্রথম বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ প্লান্ট স্থাপিত হলে ঢাকা শহরের রাস্তা-ঘাট এবং খাল-বিলসহ যত্রতত্র ময়লা পড়ে থাকবে না। বিদ্যুৎ প্লান্ট স্থাপিত হলে সেখানে প্রতিদিন তিন হাজার টন ময়লা-আবর্জনা প্রয়োজন হবে। 

এত পরিমাণ ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহ করে বিদ্যুৎ প্লান্ট দিলে ঢাকা শহরের যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ আর থাকবে না। বিদেশি একটি কোম্পানির সাথে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য চুক্তি করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, চুক্তি হওয়ার ১৮ মাসের মধ্যেই বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। 

যদিও তারা এর থেকে কিছুটা সময় বেশি চেয়েছেন। চুড়ান্ত চুক্তির সময় এই বিষয়টি ফয়সালা হবে বলেও জানান মন্ত্রী। পরিবেশের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে উল্লেখ করে তাজুল ইসলাম বলেন, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ প্লান্টের পাশে একটি ইকো পার্কও নির্মাণ করা হবে।

আমিন বাজার ল্যান্ডফিল পরিদর্শন শেষে মেয়র বলেন, এই ল্যান্ডফিলকে একটি সুন্দর একটা সিস্টেমের মধ্যে নিয়ে আসা দরকার। এটির মেয়াদ ২০১৯ সাল পর্যন্ত ছিল। এরপর আমরা এটাকে ভার্টিক্যালি উপরের দিকে ৬০ ফুট নিয়েছি। ২০২১ সালের ডিসেম্বরের পরে এখানে আর ময়লা ফেলার জায়গা থাকবেনা। ঢাকা শহরের প্রতিদিন যে আবর্জনা তৈরি হয় আমাদের এখনই পরিকল্পনা নিতে হবে ২০২২ সাল থেকে কোথায় ময়লা ফেলা হবে। 

এখানে জমি অধিগ্রহণ করে একটি ইকো পার্ক তৈরি করা হবে। এখন ময়লা আমরা লিনিয়ার ইকোনমিতে ফেলি, আবর্জনা এনে এখানে ফেলে দেই। তখন হবে সার্কুলার ইকনোমি। সে ক্ষেত্রে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ ও বায়োগ্যাস উৎপাদন হবে। আমরা এখানে ৮০ একর জায়গা অধিগ্রহণ করে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ, জৈব সার ইত্যাদি উৎপাদনে যাবো। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে আমরা এক নতুন স্বপ্নের বাস্তবায়ন দেখতে পাবো।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল হাই, সচিব রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এম সাইদুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। 


   আরও সংবাদ