ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ ভাদ্র ১৪৩১, ১১ শাওয়াল ১৪৪৫

গ্রেফতারের পর নির্যাতন প্রসঙ্গে শহীদুল আলম ‘মুখটা বন্ধ রাখুন, আপনাকে বাসায় রেখে আসবো’


প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল, ২০১৯ ১৪:০০ অপরাহ্ন


গ্রেফতারের পর নির্যাতন প্রসঙ্গে শহীদুল আলম ‘মুখটা বন্ধ রাখুন, আপনাকে বাসায় রেখে আসবো’

   

গ্রেফতারের পর সরকারের কাছে নতি স্বীকার করতে নানান রকম মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছিল খ্যাতিমান আলোকচিত্রী শহীদুল আলমের উপর। বাসা থেকে হ্যান্ডকাফ এবং চোখ বেঁধে ধরে নিয়ে যাবার পরপরই পুলিশ সদরদপ্তরে তাঁকে বলা হয়, “আপনার সঙ্গে কি ঘটেছে সেটা আমরা ভুলে যেতে চাই,আপনি আপনার মতো করে চলে যাবেন। আমরা আপনাকে বাসায় রেখে আসবো।আপনাকে মুখ বন্ধ রাখতে হবে।”

পুলিশের এ চাপের মুখে নতি স্বীকার করেননি শহীদুল আলম। খ্যাতিমান এই সাংবাদিকের ভাষ্য হলো,“যেখানে কথা বলা প্রয়োজন আমি সেখানে কথা বলব। যেটা বলতে হবে আমি সেটা বলেই যাবো।”

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বার্ষিক অনুষ্ঠান পোর্টফলিও রিভিওতে আলাপচারিতায় নিজের বন্দিদশার অভিজ্ঞতা এভাবেই তোলে ধরেন শহীদুল আলম। তাঁর সঙ্গে আলাপচারিতাটি পরিচালনা করেন লেন্স এর সহ সম্পাদক ডেভিড গনজালেজ।সাক্ষাতকারে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির ক্রমঅবনতি, অব্যাহত গুমের ভয়াবহতা, গণমাধ্যমের সরকার তোষামোদিসহ নানান প্রসঙ্গে কথা বলেন খ্যাতিমান এই আলোকচিত্রী।এছাড়াও কথা হয় আলোকচিত্র আর তার বিভিন্ন বিষয় নিয়েও।

নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত সাক্ষাতকারটির বাংলা অনুবাদ জাস্টনিউজ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো:

বাংলাদেশে চলমান দমন-নিপীড়নের দিকে ইঙ্গিত করে শহীদুল বলেন, “আপনাকে মারধর করার পর যদি মুখ বন্ধ করে রাখেন তাহলে সবকিছুই দেখবেন ঠিকঠাক।” “আমার ক্ষেত্রে যেটা ঘটেছে সেটা হলো আমি মুখ বন্ধ রাখিনি।”

নিজের গ্রেফতার প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে খ্যাতিমান আলোকচিত্রী শহীদুল আলম বলেন, “একটা বিষয় নিয়ে আমরা খুবি উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছিলাম।একের পর এক অসংখ্য লোক গুম হচ্ছে, এর মধ্য থেকে যারা বের হয়ে আসতেছে তারা এটা নিয়ে আর মুখ খুলছেনা। এর মধ্য আমাদের কিছু বন্ধু-বান্ধব রয়েছে। এর কারণটা কী তা আমরা উদঘাটন করতে চেয়েছিলাম। আমি এবং এক সহকর্মী মিলে ঠিক করলাম বিষয়টা নিয়ে আমরা কাজ করবো। মানুষ গুম হবার পর তাদের সঙ্গে কী ঘটে সেটা কারণ উদঘাটন করার চেষ্টা করবো। আমি এটা ভাবতেই পারিনি যে আমি নিজে তার গিনিপিগ সাজতে যাচ্ছি, বিষয়টি আমার সঙ্গেই ঘটবে।”

তিনি বলেন, “সে সময়টাতে সড়ক দুর্ঘটনায় লোকজন প্রাণ হারাচ্ছিলো। আর তার প্রতিবাদে অগণিত ছাত্ররা রাজপথের বিক্ষোভে নেমে আসে। আল-জাজিরার এক সাংবাদিক আমার কাছে জানতে চান-সড়ক দুর্ঘটনার নিয়ে এরকম ক্ষোভের কারণটা কী? এর পেছেনে (ক্ষোভ) যে কারণটা ছিলো তা শুধুই সড়ক দুর্ঘটনা ছিলোনা। দেশে যা ঘটছিলো তার সব কিছু নিয়ে মানুষের মনের ভেতর অসংখ্য ক্ষোভ পুঞ্জিভূত ছিলো। আর এটাই ছিলো আসল বিষয় যা এ ক্ষোভের (সড়ক আন্দোলন) ভিতর দিয়ে ছড়িয়ে পড়ে। এরি ধারাবাহিকতায় শিক্ষার্থীরা রাস্তায় আন্দোলনে নেমে আসে।”

সরকার আন্দোলনকারীদের উপর তাঁর সাঙ্গপাঙ্গদের লেলিয়ে দেয় মন্তব্য করে শহীদুল বলেন, “ ৪ আগস্ট। যেদিন আমি ছবি তোলতে গেলাম আমার উপর হামলা করা হলো, আমার ক্যামেরার সরঞ্জামাদি চূর্ণ-বিচূর্ণ করা হলো।এমনকি আমাকের মারধর করা হলো। সরকার সে সময়টাতে যা করেছিলো সেটা হলো- তার সাঙ্গ-পাঙ্গদের লেলিয়ে দেয়া হলো সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারধর করার জন্য। আমি এসব ঘটনারই ছবি তুলছিলাম। আর তাতেই তারা (সরকার) অসস্তিতে পড়ে যায়।”

তিনি বলেন, “পরদিন আমি আবারো মাঠে নামি। ফেসবুক লাইভে এসে যা ঘটছিলো তা প্রচার করি। এর পর আল-জাজিরায় একটা সাক্ষাতকার দিয়েছিলাম। সাক্ষাতকার দেবার পর আমি তা আপলোড করছিলাম। সে মুহুর্তে পরদিন আরেকটি সাক্ষাতকার দেবার জন্য বিবিসির এক সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলছিলাম। তখনি দরজায় কলিংবেল বেজে উঠলো। বাসায় তখন একা। দরজায় ছিদ্র দিয়ে দেখলাম- মাথার চুল খাটো করা এক তরুণী মহিলা আমাকে ডাকছে---আংকেল শহীদুল, যেমনটা আমার শিক্ষার্থীরা আমাকে ডেকে থাকেন। যখন দরজা খুললাম দেখলাম পেছন থেকে অনেক লোক বের হয়ে আসলো। তারা সংখ্যায় ছিলো বিশাল। কী ঘটতে যাচ্ছে সেটা আঁচ করতে পারলাম।”

তারপরের অভিজ্ঞতাটা কেমন ছিলো?- এমন প্রশ্নের জবাবে খ্যাতিমান এই আলোকচিত্রী বলেন, “আমি প্রথম খেয়াল যেটা ছিলো সেটা হলো-তারা (আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী) আমাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে এটা মানুষজনকে জানান দেয়া। তারা যদি চুপচাপ আমাকে ধরে নিয়ে যায় তাহলে কেউ জানতে পারবেনা কী ঘটেছে। লোকজন শুধু বাসায় এসে দেখবে আমি সেখানে আর নেই। এর মধ্যে বেশ কিছুটা সময় পার হয়ে গেলাে। এই কয়েকটা মিনিট ছিলো খুবি কঠিন একটা মুহূর্ত। আর তাই আমি চিৎকার করলাম, প্রতিবাদ জানালাম, অন্যদের মনযোগ আকর্ষণ করার জন্য যতটুকু করা যায় আমি তাই করার চেষ্টা করলাম। আমার এসব করার কারণে তারা (আইনশৃঙ্খলাবাহিনী) দেরী করেনি কিংবা তাদের কাজ থামিয়ে রাখেনি। আমার এসব করার কারণে অন্যরা সতর্ক হয়েছিলো, তারা বুঝতে পেরেছিলো কিছু একটা ঘটেছে। যখন তারা নীচে আসলো ততক্ষণে আমাকে তোলে নেয়া হলো। আমি ছিলাম হাতকড়া পরিহিত আর চোখ বাঁধা অবস্থায়। যেটা করতে চেয়েছিলাম সেটা কাজে দিয়েছিলো। আমাকে নিয়ে যাবার খবরটা দ্রুত চারপাশে জানাজানি হয়ে গিয়েছিলো।”

মুখ বন্ধ রেখে নতি স্বীকার করতে চাপ দেয়া হয়েছিলো উল্লেখ করে শহীদুল আলম বলেন, “আমাকে ধরে নিয়ে যাবার পরই নির্যাতন করা হয়েছিলো। ঐদিনই আমাকে পুলিশের প্রধান সদরদপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয় এবং একটা সমঝোতা করার প্রস্তাব দেয়া হয়। কী ঘটতে যাচ্ছে সেটা বুঝতে আমার বাকি ছিলোনা। বিষয়টা হলো এরকম- আপনাকে এরকমভাবে নির্যাতন করা হলো আর তারপর একটা সমঝোতার প্রস্তাব সামনে ধরিয়ে দেয়া হলো। সাধারণত মানুষ সে প্রস্তাবটা গ্রহণ করে নেয়। তাদের সমঝোতার প্রস্তাবটি ছিলো- “এপর্যন্ত যা ঘটেছে তার সবকিছুই আমরা ভুলে গেছি। আপনি আপনার মতো করে এখান থেকে চলে যেতে পারবেন। আমরা আপনাকে বাসায় রেখে আসবো। আপনি মুখটা বন্ধ রাখুন।”

কার্যত বিষয়টা দাঁড়ালো এরকম- আপনার মুখ বন্ধ করে চলার স্বাধীনতা দেয়া হলো, বলেন শহীদুল আলম।

এরপরও কী আপনি মুখ বন্ধ করেননি? সঞ্চালকের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এমন ঘটুক সেসময় সেটা আমি প্রত্যাশা করিনি। কিন্তু সে চ্যালেঞ্জের ঝুঁকিটা আমরা গ্রহণ করেছি। আমাদের প্রত্যেকের যেটা করা কর্তব্য আমি সেটাই করেছিলাম। সরকারের কাছে চালাকির যতো ট্রাম্প কার্ড ছিলো তার সবকয়টাই তারা আমার বিপক্ষে ব্যবহার করেছে। চালাকিটা এ ধাঁচের- লোকজনকে যন্ত্রণার পরিবেশে রাখো, তারা ভীত হবে এবং মুখ বন্ধ রাখবে।তাতে কাজ না হলে আদালতে কাঠগড়ায় নিয়ে দাঁড় করাও, মুখ বন্ধ হয়ে যাবে। এটাও যদি কাজে না দেয় তাহলে রিমান্ডে নিয়ে যাও দেখবে চুপ হয়ে গেছে। তাতেও যদি কাজ না হয় জেলে আটকে রাখো। জেলে মানুষকে নেবার পর যেটা ঘটছে সেটা হলো- তার পরিবারকে দেখা যায় একটা সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে আর সেখানে আটক ব্যক্তির মুক্তির জন্য প্রধানমন্ত্রীর করুণা ভিক্ষা চাওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী তখন উদারতার উদাহরণ দেখাতে আটক লোকটিকে জেল থেকে ছেড়ে দেয়। আর ঐ লোকটিও জেল থেকে বের হয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দেন।আমি এর কোনটাই করিনি। ১০৭ দিন জেলে আটক ছিলাম, এসময়টাতে আমার উপর নানান ধরনের চাপ প্রয়োগ করা হয়েছিলো। মুক্ত হবার আগে আমি যেমন ছিলাম জেল থেকে বের হবার পরও আমি সেই আগের অবস্থানেই অটল আছি।যেটা বলা প্রয়োজন আমি সেটা নিয়ে কথা বলবোই। যেটা বলতে হবে আমি সেটা বলেই যাবো।”

বাংলাদেশে গণমাধ্যমের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ সরকারের তোষামোদি করছে এবং নীতি থেকে সরে যাচ্ছে এমন মন্তব‌্য করে খ্যাতিমান আলোকচিত্রী শহীদুল আলম বলেন, “আমি যখন বিমানবন্দরে (যুক্তরাষ্ট্র) নামলাম তখনি প্রথম যে কাজটা করেছি সেটা হলো স্থানীয় একটি বাংলাদেশি গণমাধ্যম ইনফোটিউভকে সাক্ষাতকার দিয়েছি। কারণ বাংলাদেশের মূল ধারার গণমাধ্যমের উল্লেখযোগ্য অংশ তাদের নীতি থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। তারা এখন আর প্রতিবেদেকের জায়গা থেকে প্রতিবেদন করেনা। অধিকাংশই সরকারের মুখপাত্রে পরিণত হয়েছে। এ কারণেই আজকের দিনের বিকল্প হয়ে দাঁড়িয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। বাংলাদেশ ইনফোটিউব নামের এই চ্যানেলটির অনেক ফলােয়ার রয়েছে। তারা আমরা সঙ্গে যোগাযোগের পর বিমানবন্দরে আমাকে স্বাগত জানিয়েছে। এখানে কোনো কিছুর করার আগেই আমি প্রথমে সাক্ষাতকারটা দিয়েছি। আমি এটা অব্যাহত রাখবো। এটাই আমার কাজ।এটাতে ঝুঁকি রয়েছে। আমি মনে করি একজনকে যে জিনিসটা তার বিবেচনায় নিয়ে আসতে হবে তা হলো-একজন সাংবাদিককে সবসময় অবস্থান করতে হয় সব কিছুর প্রান্তসীমা পর্যন্ত। এটা হল সে জায়গা যেখানটায় তার লক্ষ‌্যের আঁচ অনুভব করতে পারবে, যত দূর যাবে তত বেশি অনুভূত হবে। আপনি যদি নিষ্ক্রিয় হন তাহলে বেশিদূর এগুতে পারবেননা। যে প্রান্তসীমায় গেলে আপনি কাংখিত বস্তুর আঁচ পেয়ে যাবেন সেটাই আপনার জায়গা, আপনি যার জন্য ছুটছেন।”

জেলে থাকাকালীন অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “১০৭ দিন কাটিয়েছি জেলের ভেতর। অন্য কয়েদির যে একটি কাজ করার সুযোগ পেয়েছি সেটা ছিলো কারাগারের দেয়ালে ম্যুরাল আঁকা, মুখের ছবি আঁকা। দেয়ালের মধ্য আমরা ৪০টিরও বেশী ম্যুরাল এঁকেছি। একটা লাল পালতোলা নৌকার ছবি হয়তো আপনারা অনেকেই দেখেছেন, এটা আমার আঁকা একটা পরিচিত ছবি যেটা ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকসহ বিভিন্ন জায়গায় প্রদর্শিত হয়েছে। কয়েদিরা আমার সম্মানে সেই ছবিটি দেয়ালে এঁকেছে। এটাই আমার গর্বের অর্জনগুলোর একটি।”

সামাজিক ইস্যুতে কাজ করেন আরো এমন ফটোসাংবাদিক জেলে আটক আছেন কী না? এমন এক প্রশ্নের জবাবে শহীদুল বলেন, “ফেসবুকে আমার পোস্টে লাইক দিয়েছেন এবং তা শেয়ার করেছেন এমন অনেকেই এখনো জেলে আটক আছেন। ৫৭ ধারা বৈধতার বিষয়টিকে আমরা চ্যালেঞ্জ করছি। আমি নিজে এই ধারায় অভিযুক্ত। যদি কেউ ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং ডিজিটাল মাধ্যমে এমন কিছু লিখে যা সরকারের বিপক্ষে যায় কিংবা তাদের জন্য স্পর্শকাতর কোনো বিষয় হয় তাহলে খুব দ্রুতই কোনো প্রকার ওয়ারেন্ট ছাড়াই এ ধারার অধীনে তাকে গ্রেফতার করতে পারবে পুলিশ। আমরা এ ধারার প্রতিবাদ করেছিলাম সরকার এটা খোলস বদলে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট নামে বিল পাস করেছে। এটা খুবই জঘণ্য আইন। যেটা ঘটেছে সেটা হলো সুনির্দিষ্ট যে আইন ছিলো সেটাকে বাতিল করে দেয়া হয়েছে। আমার মতো অনেকই এখন জেল খাটছেন। যদি আদালত আমার পক্ষে সুষ্ঠু রায় দেন তাহলে যেটা দেখা যাবে সেটা হলো অসংখ্য লোক যারা এখন জেলে আটকে আছে তারা হাজারে হাজারে বের হয়ে আসবে।”

এখন যে অবস্থানে রয়েছেন সে অবস্থানে থেকে আলোকচিত্রের কাজ চালিয়ে যেতে সমস্যা হচ্ছে কী না? এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমি এখনো বিপদের মাঝে বসবাস করছি। যে মামলা আমার নামে ঝুলে আছে তাতে ১৪ বছরের সাজা ভোগ করার ঝুঁকি আছে। প্রতিদিন আমি যেভাবে চলতাম সেটা ছিলো ভিন্ন রকমের। আমি বাইসাইকেল নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়তাম, পথে থেমে লোকদের সঙ্গে কথা বলতাম। আমি খুব ধারাবাহিকতা বজায় রেখে কাজ করতাম। আমি আর সেভাবে কাজ করতে পারিনা, নিরাপদ বোধ করিনা। ৪ আগস্ট আমিই ছিলাম একমাত্র ব্যক্তি ছবি তোলার জন্য যার উপর হামলা করা হয়েছিলো। আমার এই আলোচনায় আসাটায় সরকার আমাকে তাদের জন্য হুমকি মনে করছে। এখন অনেক লোক আছে যারা সুবিধাটা নিতে চাইবে। আমি না থাকলে তারা সরকারের কাছ থেকে বাহবা কুড়াতে পারবে। আর তাই এমি এই ঝুঁকিটা নিতে পারছিনা। এখন আর সাইকেল চালাই না, নিজে একা হাঁটতে বের হইনা, একা কোথাও যাইনা, যেতে হলে সঙ্গে অন্যদের নিয়ে যেতে হয়। এ সবগুলো বিষয় আমার কাজে বা যা করতে চাই তার মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করছে।”

আলোকচিত্র সম্পর্কে করা এক প্রশ্নের জবাবে শহীদুল আলম বলেন, “আপনি কিসের ছবি তুলছেন সেটা আসল কোনো বিষয় নয়। আপনাকে যেটা নিশ্চিত করতে হবে সেটা হলো- আপনি যা করছেন তা সম্মান এবং মর্যাদার জায়গা অক্ষুন্ন রেখে করছেন।”


   আরও সংবাদ