ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ ভাদ্র ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

‘খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থা ভয়ঙ্কর, ডাক্তার বলছে ভালো’


প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর, ২০১৯ ১৩:০০ অপরাহ্ন


‘খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থা ভয়ঙ্কর, ডাক্তার বলছে ভালো’

   

নিউজ ডেস্ক: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়ে দেশের মানুষ সত্যটা জানতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ৫ ডিসেম্বর আদালত রিপোর্ট চেয়েছেন, এইদিন সারাদেশের মানুষ প্রত্যাশা করবে তারা সত্য কথাটা বলবেন।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ন্যাশনাল পিপলস পার্টি’ আয়োজিত এনডিপি চেয়ারম্যান ডঃ ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে এক গোলটেবিল সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

খালেদা জিয়ার অসুস্থতা প্রসঙ্গ টেনে ফখরুল বলেন, উনার স্বাস্থ্যের অবস্থা এত ভয়ঙ্কর এত ভয়াবহ এই মুহূর্তে তাকে বের করে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা দরকার। গতকাল একজন ডাক্তারের সাথে কথা বলছিলাম, তিনি জানালেন, যে ড্যামেজ তার হচ্ছে সেটা আর ফিরে আসবেনা। মধ্যে তার বাঁ হাত বা সাইটটা প্যারালাইসট। কারো সাহায্য ছাড়া তিনি বিছানা থেকে উঠতে পারেন না। অথচ তাদের সরকারি কর্মকর্তা পিজি পরিচালক বলছে বলছেন তিনি ভালো আছেন,আগের চেয়ে এখন ভালো। ধিক্কার দেই আমি, জ্ঞানহীন এই মানুষদের। যারা সত্যকে গোপন করে তাদের এখানে থাকার অধিকার নেই।

তিনি বলেন, ৫ ডিসেম্বর তারিখে আদালত রিপোর্ট চেয়েছেন, এইদিন সারাদেশের মানুষ প্রত্যাশা করবে তারা সত্য কথাটা বলবেন।

ফখরুল বলেন, আমাদের জোট এবং আমরা কখনই সন্ত্রাসে বিশ্বাস করি না। আমরা গণতান্ত্রিক উপায়ে রাজনীতি করতে চাই। এটা বারবার বলেছি এবং প্রমাণিত হয়েছে।
তিনি বলেন, সন্ত্রাসী তো এই সরকার, তারা এই পথে বাধা সৃষ্টি করছে। গত নির্বাচনে তারা সন্ত্রাস করে জনগণের অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। এখনো সন্ত্রাস করে জোর করে মানুষকে দাবিয়ে রেখে তারা টিকে থাকতে চাচ্ছে।

হাইকোর্টের সামনে মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম দলের বিক্ষোভের প্রসঙ্গ টেনে ফখরুল বলেন, কয়েকদিন ধরে আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরা হুমকি দেওয়া শুরু করেছে। ওনারা বলছেন,এ ধরনের কর্মসূচি মেনে নেয়া হবে না। সমুচিত জবাব দেয়া হবে। এই হুমকি-ধামকি দিয়ে তো সারাদিন জীবন চললেন।

আওয়ামী লীগ তাদের অতীত ভুলে গেছে মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানী যিনি আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা করেছিলেন, তাঁর নাম তারা একবার উচ্চারণ করে না। একাত্তরের যুদ্ধে যিনি নেতৃত্ব দিলেন প্রবাসী মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাজউদ্দিন সাহেবের নাম নেয় না এখন কেউ।জেনারেল ওসমানী যিনি মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক ছিলেন তার নামও এখন কে উচ্চারণ করে না। কেউ উচ্চারণ করলে, তার খবর আছে। এটা হচ্ছে এদের মানসিক অবস্থা। কাউকে সহ্য করতে চায় না। অন্য কেউ ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য কাজ করছে এটাকে তারা ধ্বংস করে দিতে চায়। তাদের মানসিকতার মধ্যে আছে জমিদারি ভাব। ‘লর্ড শিপ’ আমিই সব, আমি ছাড়া আর কেউ নেই।

২০ দলের নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমাদের অনেকে বলছেন,এ প্রেস ক্লাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বক্তব্য করে কিছু হবে না। আমি আপনাদের বলছি আপনারা গ্রামে গ্রামে বাজারে বাজারে যান। কথাগুলো মানুষকে বলেন, মানুষকে সম্মিলিত করার চেষ্টা করেন। আমরা একটা সময় একটা চুঙ্গা মুখে নিয়ে বক্তৃতা করতাম। এ কাজগুলো করেন। এখন আমরা যারা গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করি সার্বভৌমত্বকে বিশেষ করে আমাদের কাজ একটাই মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করা। শুধু বিএনপি’র মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না। আপনাদের দায়িত্বটা আপনাদের পালন করতে হবে।

তিনি বলেন, এই কথা আপনাদের মনে রাখতে হবে বিএনপি তার সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করছে। অনেকেই আছেন বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলেন। বলার অধিকার তো সবারই আছে। সমালোচনা একশবার করবেন। একি সঙ্গে নিজেদের দায়িত্ব পালন করবেন। আমার খুব কষ্ট হয় যখন দেখি আমরা যারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই- সংগ্রাম করছি; আমরা নিজেদের মধ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ছি। কেনো? এই মুহূর্তে যখন সবচেয়ে বড় লড়াই হচ্ছে সেখানে আমি কেন বিভক্ত হচ্ছি। আমি কেন এমন কথা বলছি যেখানে বিভক্তির সৃষ্টি হচ্ছে। এটা ঠিক নয়, আমি মনে করি এই মুহূর্তে সবচেয়ে ভুল একটা সিদ্ধান্ত হবে। এখন সময় হচ্ছে ঐক্যের। পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে দুঃশাসনের বিরুদ্ধে।

সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, দেয়ালের লিখন গুলো আপনারা পড়ুন। কোন শাসক দেয়ালের লিখন পড়তো, মানুষের চোখের ভাষা বুঝতো, মানুষের কথা বুঝতো, তাহলে এভাবে তারা অমানুষ হতে পারত না। আজকে কোন সরকার আছে নাকি? কোথাও কোনো জবাবদিহিতা নেই। যার যা খুশি করছে।

দেশে এখন সর্বত্র উৎসব চলছে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আগামীতে জন্মোৎসব হবে, গোটা পৃথিবীতে এখন এ উৎসব চলছে বাংলাদেশের উৎসব। কার টাকায় করছেন? এটাতো পাবলিক ফান্ড। আপনারা জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। পেঁয়াজের দাম ২৪০ টাকা। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন তিনি পেঁয়াজ খান না সাথে আমাদের রাষ্ট্রপতি বলেছেন। আজকে আমার স্ত্রীও বললেন আমি আর পেঁয়াজ কিনছি না। চালের দাম বাড়ায় আমাদের খাদ্য মন্ত্রী বলেছেন, মানুষ এখন শুধু চাল খাচ্ছে। তাই চালের দাম চালের উপর চাপ পড়েছে। এগুলো শুধু পরিহাস বাংলাদেশের মানুষকে নিয়ে।


   আরও সংবাদ