ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ ভাদ্র ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

ফোকলোর'কে বাংলা বিভাগের সমমান দেয়ার প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ


প্রকাশ: ৩ অক্টোবর, ২০১৯ ১৪:০০ অপরাহ্ন


ফোকলোর'কে বাংলা বিভাগের সমমান দেয়ার প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ

   

ঢাবি প্রতিনিধি : বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক ফোকলোর বিভাগের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়কে বাংলা বিভাগের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের সমমান প্রদানের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এই সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে ১৫দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি দেন তারা।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে মানববন্ধন শেষে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিলের মধ্য দিয়ে এ কর্মসূচি শেষ হয়। 

এসময় তারা 'ইউজিসির উদ্ভট সিদ্ধান্ত মানি না-মানব না। এক দফা এক দাবি, বাংলা বিভাগে স্বতন্ত্র নিয়োগ দাবি, ফোকলোর যদি বাংলা হয়, বাংলার তবে কি দাম রয়, দাবি মোদের একটাই, ফোকলোর মুক্ত বাংলা চাই’ বলে স্লোগান দেন।

বিক্ষোভপূর্ব মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্যে ইউ.জি.সি.-র সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক ও অন্যায্য দাবী করে বলেন, ফোকলোর বিভাগের সাথে বাংলা বিভাগের তুলনা করে শুধুমাত্র বাংলা বিভাগকে নয়, বাংলাদেশকেই অবমাননা করা হয়। সম্পূর্ণ সঙ্গতিহীন একটি বিভাগকে আরেকটি বিভাগ হিসেবে বিবেচনা করা বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার জন্য মারাত্মক হুমকি। পাঠ্যক্রম ভিত্তিক অসামঞ্জস্য দূর করতে হলে ফোকলেরকে বাংলা বিভাগের আদলে গড়তে হবে- ফলে, ফোকলোরের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি বিভাগ তার স্বাতন্ত্র্য এবং পৃথক বিভাগ হিসেবে যোগ্যতা হারাবে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ফোকলোরের সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের কথা উল্লেখ করে বিভগটির জন্য স্বতন্ত্র পদ সৃষ্টির প্রতি গুরুত্ব দেন বক্তারা।

তারা বলেন, ফোকলোরের সিলেবাস এবং বাংলা বিভাগের সিলেবাসের মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। বাংলার প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা এক বছরে যে সকল বই পড়ে পরীক্ষা দেয় ফোকলোরের মাস্টার্সসহ সকল বর্ষেও তা পড়ানো হয় না। তাহলে তারা কিভাবে বাংলার সমান সুযোগ সুবিধা বা মর্যাদা পায়?

বক্তরা আরও বলেন, ফোকলোর সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অংশ হয়েও কিভাবে বাংলা বিভাগের সমমান মর্যাদা চায় তা আমাদের বোধগম্য নয়, এর আগে তারা ইচ্ছে করেই সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সাথে একীভূত হয়েছিল। আমরা ফোকলোরের বিরুদ্ধে নই। আমরা ইউজিসির অযৌক্তিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে। কেননা বাংলা সাহিত্য আর ফোকলোর এক নয়।

অনতিবিলম্বে এই অযৌক্তিক ও অন্যায় সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে প্রজ্ঞাপন জারি করতে ইউ.জি.সি.-কে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত সময় বেধে দেয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা, অন্যথায়- ২১ অক্টোবর থেকে সমগ্র বাংলাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে লাগাতার ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ও বিক্ষোভ কর্মসূচীর ঘোষণা দেয় তারা।

উল্লেখ্য যে, গত ৫ সেপ্টম্বর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়- এর ফোকলোর বিভাগের চাকুরির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনে অন্তর্ভূক্তিকরণ’ বিষয়টিকে সামনে নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের গ্র্যাজুয়েট/পোস্টগ্র্যাজুয়েটদের বাংলা বিভাগের গ্র্যাজুয়েট/পোস্টগ্র্যাজুয়েট হিসেবে বিবেচনা করে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন-এ অন্তর্ভূক্তিপূর্বক কোড বরাদ্দের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞ মতামত প্রদান করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর একটি অনুলিপি পাঠায়। এর প্রেক্ষিতে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানায়।


   আরও সংবাদ