ঢাকা, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ ভাদ্র ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজীবের বিচারের দাবিতে স্থানীয় আ.লীগ নেতা-কর্মীরদের বিক্ষোভ


প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর, ২০১৯ ১৪:০০ অপরাহ্ন


রাজীবের বিচারের দাবিতে স্থানীয় আ.লীগ নেতা-কর্মীরদের বিক্ষোভ

   

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের বহিষ্কৃত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও স্বঘোষিত ‘জনতার কমিশনার’ তারেকুজ্জামান রাজীবের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মীরা।

আন্দোলনকারীদের কেউ কেউ অতীতের নানা ঘটনার জন্য রাজীবকে দায়ি করছেন। এ সময় তাদের রাজীব বিরোধী নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়। 

রোববার (২০ অক্টোবর) বেলা ১২টার পর ওয়ার্ডের বছিলা নতুন রাস্তায় জড়ো হয়ে তারা এসব দাবি জানান। ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এই আন্দোলনের ডাক দেন। 

এসময় মোহাম্মদপুরে চাঞ্চল্যকর তছির হত্যা মামলার আসামীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলনে যোগ দেন বোন মুন্নি বেগমও। 

তিনি বলেন, আমার ভাই মারা যাওয়ার আগে স্টেটমেন্ট দিয়েছে। ১৯ জনকে আসামী করা হয়েছিল। এখন সবাই জামিন পেয়েছে। ওরা সবাই রাজীবের লোক।

রাজীবের নেতাকর্মীদের আক্রমণের শিকার হওয়া রায়ের বাজার বুদ্ধিজীবি ইউনিট আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুম খান বলেন, গত রমজানে রাজীবের লোকজন মিলন, খায়ের আলম, শ্রী অমল কান্তি, খোকনসহ আমাদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হই। কিন্তু এখ নপর্যন্ত আমরা বিচার পাই নাই। আমরা বিচার চাই।

আন্দোলনকারীদের একাংশদের অভিযোগ, রাজীবের নেতাকর্মীরা ফুটপাতের হকারদের কাছ থেকে চাঁদা তোলেন। এটি বন্ধের দাবি জানিয়ে তারা বলেন, মডু কামাল, দেলোয়ার, সোহাগ, আল আমিন নামের চারজন এই চাঁদা আদায় করছেন। 

ব্যবসায়ীরা জানান, রাজীবের লোকজন দোকান প্রতি প্রতিদিন ২০০ টাকা হারে চাঁদা আদায় করতেন। আগে এই চাঁদার পরিমাণ ছিল ১০০ টাকা। বছিলা রোডের এক পাশেই দোকান রয়েছে ২০৭টি এবং অপর পাশে প্রায় ৪০টি দোকান রয়েছে। অর্থাৎ সেখান থেকে প্রতিদিন চাঁদা আদায় হয় ৫০ হাজার টাকার বেশি। তবে গত দুই দিন ধরে এই চাঁদা আদায় বন্ধ রয়েছে। 

এদিকে কাউন্সিলর হওয়ার পরপরই রাজীব বনে যান স্বঘোষিত ‘জনতার কমিশনার’। তবে তিনি জনতার কাছ থেকেই মাসে বিপুল অঙ্কের টাকা চাঁদা নিতেন।

প্রায় ছয় বছর আগে মোহাম্মদপুরের মোহাম্মদীয়া হাউজিং সোসাইটির একটি বাড়ির নিচতলার গ্যারেজের পাশেই ছোট্ট এক কক্ষে সস্ত্রীক ভাড়া থাকতেন রাজীব। ভাড়া দিতেন ছয় হাজার টাকা। চালাক-চতুর রাজীব হঠাৎ করেই রাজনীতির মাঠে যোগ দেন। যুবলীগ দিয়েই শুরু করেন রাজনৈতিক জীবন। 

অল্পদিনেই নেতাদের সান্নিধ্যে এসে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক পদ বাগিয়ে নেন। ওয়ার্ড কাউন্সিলর হওয়ার পর যেন হাতে পান আলাদিনের চেরাগ। কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর নামেরও ভিন্নতা আসে রাজীবের। তারেকুজ্জামান রাজীব থেকে ‘টিজেড রাজীব’ ও ‘লায়ন টিজেড রাজীব’ বনে যান এই কাউন্সিলর। 

যদিও পরে নিজের নামের পাশ থেকে ‘লায়ন’ শব্দটি নিজেই সরিয়ে নেন। সামান্য টাকায় ভাড়ায় থাকা রাজীব এখন বেশ কয়েকটি জমি, বিলাসবহুল বাড়ি, বিশ্বের প্রথম সারির বিলাসবহুল গাড়ির মালিক। সিটি করপোরেশন থেকে কাউন্সিলর হিসেবে মাসে ৩৬ হাজার টাকা সম্মানী ছাড়া আর কোনো দৃশ্যমান আয় নেই এই ওয়ার্ড কাউন্সিলরের।


   আরও সংবাদ