ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ ভাদ্র ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

যুবসমাজকে উৎপাদনমুখী শক্তিতে রূপান্তারিত করতে কাজ করছে সরকার : আইনমন্ত্রী


প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৯ ১৩:০০ অপরাহ্ন


যুবসমাজকে উৎপাদনমুখী শক্তিতে রূপান্তারিত করতে কাজ করছে সরকার : আইনমন্ত্রী

   

স্টাফ রিপোর্টার : আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, যুবসমাজ দেশের মূল্যবান সম্পদ। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ যুবসমাজ। ডিজিটাল বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রধানতম শক্তি হচ্ছে এই যুবসমাজ। তাই যুবগোষ্ঠীকে সুসংগঠিত, সুশৃঙ্খল এবং উৎপাদনমুখী শক্তিতে রূপান্তরের লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করছে সরকার। 

তিনি বলেন, যুব উন্নয়নে সরকারের অগ্রাধিকার হচ্ছে যুবকদের মানসম্মত শিক্ষা প্রদান, দক্ষতা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ ও মাদকমুক্ত যুবসমাজ। 

শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড কর্তৃক তিন সহস্রাধিক দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আনিসুল হক বলেন, আজকের বিশ্ব জ্ঞান ও বিজ্ঞানের বিশ্ব। এই নতুন বিশ্বে শিক্ষার ক্ষেত্রে যে-জাতি যত সাফল্য অর্জন করবে, সে জাতি জীবন-জীবিকার মানোন্নয়নে ও মানবিক গুণাবলি বিকাশে ততটাই অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি লাভ করবে। সে জন্য বর্তমান শিক্ষাবান্ধব সরকার শিক্ষার অধিকার ও মানোন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে যাচ্ছে। স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষাকে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যুগোপযোগী করতে কারিগরি শিক্ষা এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে অধিকতর বিনিয়োগ করছে সরকার। ফলশ্রুতিতে মানবসম্পদ উন্নয়ন ও শিক্ষা প্রসারে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে।

মন্ত্রী আরো বলেন, শেখ হাসিনার সুকৌশলী নেতৃত্বে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে, এখন উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেতে চলেছে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের কাতারে শামিল হওয়ার পথে ধাবমান। এই উন্নয়নের সুফল থেকে কেউই যাতে বঞ্চিত না হয় সে-লক্ষ্যে সরকার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সমন্বিত কর্মপন্থা বাস্তবায়ন করে চলেছে।
 
বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে আইনমন্ত্রী বলেন, তোমরা অত্যন্ত ভাগ্যবান। কেননা পরীক্ষার ফলাফল, মেধা ও প্রজ্ঞাসহ অনেক বিষয়াদি যাচাই-বাছাইয়ের পর বিপুল সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে থেকে ডাচ-বাংলা ব্যাংক এই বৃত্তি প্রদানের জন্য তোমাদেরকে মনোনীত করেছে। সহযোগিতার হাত প্রসারিত করেছে। ভালভাবে লেখাপড়া করে তোমরা যদি ভবিষ্যতে নিজেদেরকে যোগ্য করে গড়ে তুলতে পার তবেই ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এ উদ্যোগ সার্থক হবে।

তোমরা নিজেদেরকে এমনভাবে গড়ে তুলবে যাতে তোমরাও ডাচ্-বাংলা ব্যাংক এর মতো শিক্ষা বৃত্তি দিতে পারো এবং এই স্বপ্ন তোমাদের এখন থেকেই লালন করতে হবে।

অনুষ্ঠানে কয়েকজন শিক্ষার্থীর হাতে বৃত্তিপত্র তুলে দিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক এবছর এইচএসসি এবং সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৩ হাজার ১৮ জন শিক্ষার্থীকে স্নাতক শ্রেণীতে অধ্যয়নের জন্য মাসিক তিন হাজার টাকা হারে বৃত্তি দিচ্ছে এবং এই শিক্ষাবৃত্তির শতকরা ৯০ ভাগ দেয়া হচ্ছে গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের। নিঃসন্দেহে এটি ব্যাংকের একটি মহতী উদ্যোগ। এই উদ্যোগ আসলে ৩ হাজার ১৮টি পরিবারকে আলোকিত করার অন্যতম সিরি তৈরি করে দিয়েছে। 

আনিসুল বলেন, অনুষ্ঠানে বৃত্তিপ্রাপ্ত কয়েকজন শিক্ষার্থীর জীবন সংগ্রামের গল্প শুনে মনে হলো চরম দরিদ্রতাও তাদের আকাঙ্খা, ইচ্ছাশক্তি, প্রতিভা এমনকি দৃষ্টিহীনতাকেও পরাস্ত করতে পারেনি। বরং তারাই তাদের মেধা ও শ্রম দিয়ে সেগুলোকে পরাস্ত করেছে এবং কঠিন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নিজেদেরকে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের বৃত্তিপ্রাপ্তির যোগ্য করে তুলেছে এবং তারা বৃত্তির জন্য মনোনীতও হয়েছে। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক বৃত্তি দিয়ে তাদের মেধাকে বিকশিত করার সুযোগ করে দিলো, তাদের পিতা-মাতার উপর চাপ কমিয়ে দিলো। 

মন্ত্রী বলেন, অনুষ্ঠানে অনেক অভিভাবক আছেন যারা বহু ত্যাগের মাধ্যমে এবং নানান প্রতিকূলতা মোকবেলা করে সন্তানদের মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে গড়ে তুলেছেন, ডাচ বাংলা ব্যাংকের বৃত্তিপ্রাপ্তির জন্য যোগ্য করে তুলেছেন। অনেক অভিভাবক আছেন, যারা তাঁদের সন্তানের পড়ালেখার জন্য সংসারের অভাব-অনটন সন্তানকে বুঝতে দেননি, নিজেদের অনেক আশা-আকাঙ্খা বিসর্জন দিয়েছেন। সুখ-শান্তি ত্যাগ করেছেন, পড়ালেখার খরচ জোগানোর জন্য সময়ে-অসময়ে নিজের কিংবা অন্যের বাড়িতে কাজ করেছেন, অনেক মা আছেন যারা অভাব-অনটনের সময় নিজের মুখের খাবার সন্তানকে খাইয়েছেন তবুও সন্তানকে কষ্ট দেননি। অমি তাঁদের সকলকে জানাই গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।

ডাচ্-বাংলা ব্যাংক পরিচালনা পরির্ষদের চেয়ারম্যান সায়েম আহমেদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক  আবুল কাশেম শিরিন বক্তৃতা করেন। এছাড়া বৃত্তিপ্রাপ্ত কয়েকজন শিক্ষার্থী তাদের অনুভুতি ব্যক্ত করেন।


   আরও সংবাদ