প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারী, ২০২০ ১৩:০০ অপরাহ্ন
মণিরামপুর যশোর থেকে আব্বাস উদ্দিন : যশোরের মণিরামপুরের দুই হাত-দুই পা বিহীন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন প্রতিবন্ধী শিশু লিতুন জিরা মুখ দিয়ে লিখেই ২০১৯ সালের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় জিপিএ-৫ অর্জন করেছে। তার অদম্য প্রতিভা ও সাফল্যের খবর মিডিয়ায় প্রকাশের পর অনেক মানবিক ব্যক্তির হৃদয় স্পর্শ করে। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা থেকে বসুন্ধরা গ্রুপের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (হেড অব বাল্ক সেলস) রেদোয়ানুর রহমান মণিরামপুর উপজেলার শেখপাড়া খানপুর গ্রামে লিতুন জিরার বাড়িতে আসেন। এক অনানুষ্ঠানিক পরিবেশে বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফিয়াত সোবহান সানবীর এর পক্ষে তিনি লিতুন জিরার হাতে পাঁচ লাখ টাকার চেক, স্কুল ব্যাগ ও উপহার সামগ্রী তুলে দেন। এসময় বসুন্ধরা ফুড এন্ড বেভারেজ ইন্ডাষ্ট্রি লিমিটেড ও বসুন্ধরা মাল্টি ফুড প্রডাক্ট লিমিটেডের উইং ম্যানেজার মাহবুবুর রহমান, বসুন্ধরা গ্রুপের বাল্ক সেলসের ডেপুটি ম্যানেজার মোঃ শহিদুল ইসলাম, ডিভিশনাল সেলস ইনচার্জ জিএম কামরুজ্জামান, এরিয়া সেলস ম্যানেজার মোঃ জাহিদুল ইসলাম, টেরিটরি সেল্স এক্সিকিউটিভ রঞ্জু সরকার উপস্থিত ছিলেন। চেক ও উপহার সামগ্রী তুলে দেয়ার সময় রেদোয়ানুর রহমান বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করে। বসুন্ধরা গ্রুপ অসহায় প্রতিবন্ধীদের সেবা ও তাদের কল্যাণে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে কাজ করছে। লিতুন জিরার পরিবার চাইলে বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিষ্ঠিত সে সব প্রতিষ্ঠানে তাকে সংযুক্ত করা যেতে পারে। তার পরিবারের পক্ষ থেকে লিতুন জিরাকে ভবিষ্যৎ লেখাপড়াসহ সকল দায়িত্ব নেওয়ার আবেদন করলে তা বসুন্ধরা গ্রুপের ম্যানেজম্যান্টের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা করা যাবে বলে তিনি জানান। লিতুন জিরার বাবা হাবিবুর রহমান বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ আজ আমার বাড়িতে এসে পাঁচ লাখ টাকার চেকসহ যেসব উপহার সামগ্রী তুলে দিয়েছেন, আমার সন্তান ও আমার পরিবারের সাথে কথা বলেছেন, খোঁজ-খবর নিয়েছেন। ভবিষ্যতেও আমরা চাইলে লিতুন জিরার জন্য সব কিছুর দায়িত্ব নেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এতেই প্রমাণ হয় বসুন্ধরা গ্রুপ দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করে। আমি ও আমার পরিবার বসুন্ধরার কাছে ঋণী হয়ে গেলাম। আমি বসুন্ধরা গ্রুপের সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। উল্লেখ্য, মণিরামপুর উপজেলার শেখপাড়া খানপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান ও জাহানারা বেগমের মেয়ে লিতুন জিরা। দুই হাত-পা বিহীন অবস্থায় জন্ম নেয় সে। লিতুন জিরা স্থানীয় খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে ২০১৯ সালের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায়(পিইসি) অংশ নিয়ে জিপিএ-৫.০০ পাওয়ার গৌরব অর্জন করে । তার প্রতিভাও সাফল্যের খবর বিভিন্ন সময়ে গণ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। বর্তমানে লিতুন জিরা স্থানীয় গোপালপুর স্কুল এন্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। অদম্য মেধা আর ইচ্ছা শক্তি তার। হাত-পা না থাকায় মুখ দিয়ে লেখে সে। পড়ালেখায় সে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে শুধু কাসে ফার্স্ট হয়নি,হয়েছে স্কুল ফার্স্টও।লেখাপড়া শিখে সমাজের অন্যদের মতো মানুষ হতে চায় লিতুন জিরা। সমাজের বোঝা কিংবা পরনির্ভরশীর নয়, আত্ম-নির্ভরশীল হতে চায় সে। লিতুন জিরার পাশে বসুন্ধরা গ্রুপ মানবিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়ায় লিতুন জিরা তার প্রতিক্রিয়ায় বসুন্ধরা গ্রুপের কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে সে বলেন, আজ আমি খুবই খুশি এভং আমি আনন্দিত। এ দিনটি আমার জীবনে একটি স্মরণীয় দিন হয়ে থাকবে।
