ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ ভাদ্র ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫

প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনা ঘোষণা প্রচণ্ড হতাশ করেছে : মান্না


প্রকাশ: ৪ এপ্রিল, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন


প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনা ঘোষণা প্রচণ্ড হতাশ করেছে : মান্না

   

স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী আজ সকালে করোনা মোকাবেলায় যে আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন সেটা আমাদের প্রচণ্ড হতাশ করেছে। এতে অতি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ যেমন নেয়া হয়নি, তেমনি প্রকৃত সত্য আড়াল করে প্রণোদনার পরিমাণকে অনেক বড় করে দেখানো হয়েছে। 

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রণোদনা ঘোষণা প্রসঙ্গে এক ভিডিও বার্তায় এ প্রতিক্রিয়া জনান।

শিল্প, সেবা খাত এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারী শিল্পের ঋণ-
বৃহৎ শিল্প ও সার্ভিস সেক্টরে ৩০ হাজার কোটি এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে ২০ হাজার কোটি টাকার ঋণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। দেশের শিল্প এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যেকোনো সময়েই ব্যাংকের ঋণ পাবে, ঋণ দেয়াই ব্যাংকের ব্যবসা। এটা কোনোভাবেই প্রণোদনা হতে পারে না।

বৃহৎ শিল্প ও সার্ভিস সেক্টরে ঋণের সুদের ৯% এর ৪.৫% এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ঋণের সুদের ৫% সরকার ভর্তুকি হিসেবে ব্যাংকগুলোকে দেবে। প্রণোদনা বললে এইটুকুকেই শুধু বলা যেতে পারে। প্রথমত এই ঋণের পুরোটাও প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে পৌঁছাবে কি না অনিশ্চিত, এমনকি সেটা পুরোটা পৌঁছলেও এর পরিমাণ দাঁড়াবে ২৫০০ কোটি টাকার‌ও কম।

বাংলাদেশ ব্যাংক প্রবর্তিত এক্সপোর্ট ডেভলপমেন্ট ফান্ডের (ইডিএফ) সুবিধা বাড়ানো-

এই ফান্ডে অতিরিক্ত দেড় বিলিয়ন ডলার (১২,৭৫০ কোটি টাকা) যুক্ত করা হচ্ছে, এতে মোট ফান্ডের পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ৫ বিলিয়ন ডলার। এবং এতে সুদের হার ২.৭৩ থেকে ২ শতাংশে নামানো হয়েছে। ০.৭৩ শতাংশ সুদ কমানোই এই ক্ষেত্রে প্রণোদনা। এই হ্রাসকৃত হার পুরো ফান্ডের ক্ষেত্রে কার্যকর হলে এই প্রণোদনার পরিমাণ টাকার অংকে হবে মাত্র ৩১০ কোটি টাকা। 

প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিট রিফাইন্যান্স স্কিম-

এই নামে নামে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৫ হাজার কোটি টাকার টাকার নতুন ঋণ সুবিধার কথা বলা হয়েছে যাতে সুদের হার হবে ৭ শতাংশ। বাজারে প্রচলিত সুদের চাইতে যে হার ২% কম। এই ২% কম সুদই প্রণোদনা। পুরো ঋণ যদি বিতরণ করা হয়, তাহলে এই ক্ষেত্রে প্রণোদনার পরিমাণ দাঁড়াবে ১০০ কোটি টাকা। 

এই ভাষণের সবচেয়ে হতাশাজনক দিক হচ্ছে বর্তমানে অঘোষিত লক ডাউনের কারনে 'দিন আনে দিন খায়' এমন মানুষ তো বটেই নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত সহ ৮ থেকে  ১০ কোটি মানুষের জন্য ন্যূনতম কোন সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেই। এর মধ্যেই মিডিয়ায় প্রকাশিত হচ্ছে রাস্তার মোড়ে মোড়ে অভাবী মানুষরা বসে আছে একটু খাবার পাবে এই আশায়। 

উন্নত বিশ্বের কথা বাদ দিলেও এই দক্ষিণ এশিয়াতে করোনা মোকাবেলায় সরকারগুলো যে ফান্ডের ঘোষণা করেছে সেগুলোতে এরকম প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে নগদ অর্থ সাহায্য এবং বিনামূল্যে কিংবা নামমাত্র মূল্যে খাদ্য সাহায্য দেয়া, কয়েক মাসের জন্য বিদ্যুৎ পানি গ্যাস সহ ইউটিলিটি বিল মওকুফ করা কিংবা রেয়াত দেয়া, প্রধান প্রধান খাদ্যদ্রব্যে ভর্তুকি দেয়া সহ নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

করোনা বিস্তার ঠেকানোর সবচেয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো না নিয়ে সরকার এই দেশের কোটি কোটি মানুষকে জীবন হারানোর মতো ভয়াবহ বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছে। ওদিকে এই মানুষগুলোর ভরণপোষণের দায়িত্ব না নেবার কারণে রোগে আক্রান্ত হয়ে যারা মারা যাবে না, তারা আছে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে এবং অনেকেই মারা যাবে না খেয়ে। 


   আরও সংবাদ