ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ ভাদ্র ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫

চৌগাছায় ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে কলেজছাত্রীকে হত্যার চেষ্টা


প্রকাশ: ৫ এপ্রিল, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন


চৌগাছায় ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে কলেজছাত্রীকে হত্যার চেষ্টা

   

চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি : যশোরের চৌগাছায় এক কলেজ ছাত্রীকে (১৭) ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে বিষ খাইয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে মুসা ব্যাপারী (২৫) নামের এক গরু ব্যবসায়ী। বর্তমানে ওই ছাত্রী চৌগাছা উপজেলা ৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সে চৌগাছার একটি কলেজের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী। 

জানা গেছে, মাস খানেক আগেও একবার মুসা ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। সে সময় মুসার বড় ভাই ওই ছাত্রীর বাবা-মা’র হাতে-পায়ে ধরে আইনের আশ্রয় নেয়া থেকে বিরত রাখে।

গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার একটি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

ভূক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা বলেন, আমরা গরীব মানুষ। ঘর-বাড়িও ঠিকমত নেই। গতকাল রাতে আমার মেয়ে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাড়ির বাইরের কাঁচা বাথরুমে গেলে মুসা ব্যাপারী তাকে পেছন থেকে জাপটে ধরে।

গামছা দিয়ে মুখ বেধে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। আমার মেয়ে বাধা দিলে এক পর্যায়ে তাকে একটি টাইগারের বোতলে থাকা কীটনাশক জোর করে মুখে ঢেলে দেয়। মেয়ের ডাক-চিৎকারে আমরা দৌড়ে আসলে মুসা পালিয়ে যায়। 

এসময় একটু দুরে মুখে গামছা বাধা আরো দুজন দাড়িয়ে ছিল। আমরা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয়দের সহায়তায় চৌগাছা হাসপাতালে ভর্তি করি। 

এ বিষয়ে রোববার রাতেই চৌগাছা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভূক্তভোগী পরিবার।

মেয়েটির মা আরো বলেন, প্রতিবেশি মুসা ব্যাপারী দির্ঘদিন ধরেই আমার মেয়েকে কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। রাজি না হওয়ায় একমাস আগে আমার মেয়ে প্রাকৃতিক কাজে সাড়া দিতে গেলে মুসা তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। তখন মেয়ের ডাক-চিৎকারে আমরা বেরিয়ে আসলে সে পালিয়ে যায়। 

সে সময় তার বড়ভাই আয়ূব হোসেনসহ অন্যরা আমাদের হাতে-পায়ে ধরে ভবিষ্যতে আর এরকম কিছু হবে না বলে এবিষয়ে মামলা না করতে অনুরোধ করে।

চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লুৎফুন্নাহার ডাক্তার ফাতেমা খাতুনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, গভীর রাতে এরকম একটি মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাকে ওয়াশ করার পর বর্তমানে কিছুটা সুস্থ আছে। মেয়েটিকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। 

তিনি আরো বলেন, ওই সময়ে দায়িত্বপালনরত ডা. ফাতেমা আমাকে বলেছেন মেয়েটির গায়ে বেশকিছু আচড়ের দাগ রয়েছে।

চৌগাছা থানার ওসি রিফাত খান রাজীব বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়ে রাতেই অভিযুক্তকে আটকের জন্য অভিযান চালানো হয়েছে। তাকে ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।

ঘটনা শুনে সোমবার বেলা সাড়ে দশটার দিকে চৌগাছা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ড. মোস্তানিছুর রহমান মেয়েটির চিকিৎসার খোঁজ নিতে চৌগাছা হাসপাতালে যান। 

এসময় হাসপাতালে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমি দোষীকে দ্রুত গ্রেফতারের জন্য পুলিশ প্রশাসনকে বলেছি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মুসার বড় ভাই আয়ুব হোসেন বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তখন আমি মাফ চেয়ে ঘটনার মীমাংশা করি। কিন্তু ও বেয়াদব হয়ে গেছে। আমাদের কথা শোনেনা। কি করব বলুন? আমরাও ঘটনার সুষ্ঠ বিচার চাই।


   আরও সংবাদ