ঢাকা, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ ফাল্গুন ১৪৩২, ৯ জ্বমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

ছিন্নমূল শিশুদের পাশে ‘মুসাফির স্কুুল’


প্রকাশ: ৫ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ পূর্বাহ্ন


ছিন্নমূল শিশুদের পাশে ‘মুসাফির স্কুুল’

 

বিএন বিশেষ: তরুণ মুসাফির ইমরান। পড়াশোনা করেন ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজে। তিনি সেচ্ছাসেবী সংগঠন মুসাফির স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা। সমাজের ছিন্নমূল, অবহেলিত, দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষাদান করে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতি শুক্রবার বিকেলে গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশনে কিছু তরুণ শিক্ষার্থীর মাধ্যমে পরিচালিত হয় স্কুলটি।

‘আমরা কিছু মুসাফির, গড়ে তুলবো সুখের নীড়’—এই স্লোগানকে সামনে নিয়ে গড়ে ওঠে মুসাফির স্কুল। এই মুসাফির স্কুলের চিন্তা কখন থেকে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠাতা মুসাফির বলেন, ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসের কোনো এক বিকালে জয়দেবপুর স্টেশনে একটি মেয়ে শিশু আমাকে বলল, ‘২টা টাকা দিবেন, সারাদিন কিছুই খাই নাই।’ তখন তাকে বললাম, চলো তোমাকে কিছু কিনে দেই। বাচ্চাটা বলল, কিনে দিতে হবে না আমাকে টাকা দেন। আমি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানাই। এবং টাকা না দিয়ে রুটি ও কলা কিনে দেই। তখন তার সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পারলাম—সে ভিক্ষা করা ছেড়ে দিতে চায়। পড়ালেখা করার ইচ্ছে আছে কি-না জানতে চাইলে সে পড়ালেখা করার ইচ্ছে দেখায়। তখনই চিন্তা করি এ ধরনের শিশুদের জন্য কিছু করা উচিত্। পরের দিন বন্ধুদের সঙ্গে বিষয়টা শেয়ার করি এবং জয়দেবপুর স্টেশনে যাই। সেই থেকে শুরু মুসাফির স্কুলের।

২০১৬ সালে মুসাফির স্কুলে শিক্ষার্থী ছিল ৭-৮ জন। কিন্তু বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০ জন। এতে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছেন প্রায় ২০ জন এবং উপদেষ্টা হিসেবে আছেন চার জন।

তিনি বলেন, ‘স্টেশনের আশপাশের পথশিশু অথবা যাদের বাবা মা কেউ নেই, বা থাকলেও শারীরিকভাবে অক্ষম তারাই মূলত এই স্কুলে পড়ালেখা করে। এখানে যারা ক্লাস নেয় সবাই শিক্ষার্থী। লেখাপড়ার পাশাপাশি তাদের দেওয়া হয় বিশেষ খাবার। কখনো দেওয়া হয় বিরিয়ানি, তেহেরি, মাছ বা মাংস দিয়ে ভাত। এছাড়া মাঝে মধ্যে ফলও দিয়ে থাকে সংগঠনটি। উদ্দেশ্য— খাবার পেয়ে যেন তারা পড়ালেখায় নিয়মিত হয়। এছাড়া মুসাফির স্কুল থেকে সবার জন্য স্কুল ড্রেস, প্রতি ঈদে সবাইকে ঈদের নতুন পোশাক, শীতবস্ত্র, বৈশাখে শাড়ি ও পাঞ্জাবি কিনে দেওয়া হয়। আমাদের দুই শিক্ষক ও কিছু ব্যক্তির সহায়তায় এই কাজগুলো হচ্ছে।’

মুসাফির স্কুলকে নিয়ে কী স্বপ্ন দেখেন জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠাতা মুসাফির ইমরান বলেন, ‘আমি স্বপ্ন দেখি এবং বিশ্বাস করি একদিন এই শিশুরাই বাংলাদেশের জন্য আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়াবে। যে শিশুদের সমাজের সবাই বোঝা মনে করত, তারাই সমাজের চালিকাশক্তি হয়ে দাঁড়াবে।’


   আরও সংবাদ