ঢাকা, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ ভাদ্র ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

বিশ্ব তাকিয়ে আছে সারাহ গিলবার্ট'এর দিকে


প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন


বিশ্ব তাকিয়ে আছে সারাহ গিলবার্ট'এর দিকে

   

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নোভেল করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক কিংবা কার্যকর ওষুধ উদ্ভাবনের জন্য বিশ্বজুড়ে নানামুখী গবেষণা করছেন চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা। তবে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো কূল কিনারাই পাননি তারা। এ অবস্থায় অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাকসিন বিজ্ঞানী অধ্যাপক সারাহ গিলবার্ট দেখাচ্ছেন আলোর পথ। সারা পৃথিবীই বলতে গেলে তাকিয়ে রয়েছে তার দিকে।

সারাহ গিলবার্ট এর আগে ইবোলা ভাইরাসের সফল ভ্যাকসিন তৈরি করে পৃথিবীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন।

এবার করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক পরীক্ষা করে দেখছেন সারাহ ও তার দল। সারাহর নেতৃত্বে অক্সফোর্ডের গবেষক দলটি ২৩ এপ্রিল মানবদেহে ভ্যাকসিনটি প্রয়োগ করেন। প্রথম ধাপে ১৮ থেকে ৫৫ বছর বয়সী ৫৬১ জন স্বাস্থ্যবান স্বেচ্ছাসেবীর শরীরে ভ্যাকসিনটি প্রয়োগ করা হবে। দ্বিতীয় ধাপে প্রয়োগ করা হবে ৫৫১ জনের শরীরে। মে মাসেই চলে আসবে ফলাফল।

সারাহ জানিয়েছেন, এটি সফল হওয়ার সম্ভাবনা ৮০ শতাংশ। মে মাসের মধ্যে প্রথম ধাপের কার্যক্রম শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এরপর আরও পাঁচ হাজার জনের শরীরে প্রয়োগ করা হবে। এরপর তারা সেপ্টেম্বরের মধ্যে ১০ লাখ ভ্যাকসিন উৎপাদন করবে। ভ্যাকসিনটির নাম দেওয়া হয়েছে ChAdOx1nCoV-19।

লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হচ্ছে। কলেজটি নিজেও ভ্যাকসিন তৈরির গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। দুই প্রকল্পের জন্য বৃটিশ সরকার ৪০ মিলিয়ন ইউরো বরাদ্দ দিয়েছে।

অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন গ্রুপের পরিচালক অধ্যাপক অ্যান্ড্রু পোলার্ড বলেছেন, ‘মে মাসে আমরা আরও বড় আকারে পাঁচ হাজার মানুষের ওপর পরীক্ষা চালাবো, যেখানে বয়স্করাও থাকবেন।’

কখন বাজারে আসতে পারে ভ্যাকসিন এ নিয়ে গবেষকরা বলছেন, ভ্যাকসিনগুলো মানবদেহে প্রয়োগের অনুমতি পেয়েছে, সেগুলো যদি সফল হয়, তবু সময় লাগবে ১২ থেকে ১৮ মাস। এছাড়া অগ্রাধিকার বিবেচনাতেই সহজলভ্য হবে। অর্থাৎ বেশি ঝুঁকিতে যারা রয়েছে, তারাই আগে পাবে।এক্ষেত্রে শুধু যুক্তরাজ্যই এটি পাবে এমন নয়, উন্নয়নশীল দেশগুলোও পাবে। আর এজন্য তাদের পর্যাপ্ত ডোজ সরবরাহ করতে হবে বলে মনে করছেন অ্যান্ড্রু পোলার্ড।

ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা:
বয়স্ক মানুষদের ক্ষেত্রে এ ভ্যাকসিন কম কাজে দেবে। এক্ষেত্রে ৫৫ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য ভ্যাকসিন তেমন কাজ করবে না, যদি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়। তবে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনা গেলে মহামারি কেটে যাবে।

বাংলাদেশের ডাক্তাররাও তাকিয়ে আছেন সারা গিলবার্টের দিকেই। তারা বলছেন, চিকিৎসা বিজ্ঞানে শক্তিশালী হয়েও উন্নত বিশ্ব যেখানে ধরাশায়ী, সেখানে বাংলাদেশের মতো রাষ্ট্রগুলোর অবস্থা খুবই নাজুক। যদিও বাংলাদেশে মৃত্যু এখনো তেমন বেশি নয়। তবে বিশেষজ্ঞরা মে মাসকে খুব গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন। এক্ষেত্রে সারা গিলবার্টের ভ্যাকসিন যদি কার্যকর হয়, তবে সেটি তাদের জন্য হবে স্বস্তিদায়ক।

নোভেল করোনা ভাইরাস মানবদেহের শ্বাসতন্ত্রে আক্রমণ করে। এক্ষেত্রে ক্রনিক রোগীর ফুসফুস একেবারেই কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে। এ কারণে অক্সিজেন থেরাপি ছাড়া চিকিৎসা বিজ্ঞানের কাছে এর আর কোনো সেবা নেই। কিছু ওষুধ ডাক্তাররা প্রয়োগ করলেও তা কেবল রোগীর কষ্ট প্রশমন করছে। কিন্তু ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার মতো কার্যকর ওষুধ এখনো উদ্ভাবিত হয়নি।


   আরও সংবাদ