প্রকাশ: ১১ নভেম্বর, ২০২৫ ০১:৪৫ পূর্বাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের নয়াদিল্লিতে গাড়ি বিস্ফোরণের ঘটনায় এক চিকিৎসকের জড়িত থাকার বিষয়ে সন্দেহ করছে পুলিশ। ঘটনার কয়েকদিন আগে বিস্ফোরকসহ হরিয়ানা ও উত্তর প্রদেশ থেকে দুই চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ বলছে, এই চক্রের সঙ্গে আরেকজন চিকিৎসকও জড়িত। ধারণা করা হচ্ছে, তিনিই হামলাকারী।
জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের শীর্ষ সূত্রের বরাত দিয়ে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, বিস্ফোরণটি সম্ভবত আন্তর্জাতিক ও আন্তঃরাজ্য সন্ত্রাসী চক্রের কাজ। দুজনকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে পুলিশ একদিন আগেও চক্রটি ভেঙে দেয়। গ্রেপ্তারকৃতরা জইশ-ই-মোহাম্মদ ও আনসার গজওয়াতুল হিন্দ নামের সংগঠনের সঙ্গে জড়িত।
প্রথমে গ্রেপ্তার হন কাশ্মীরের পুলওয়ামার বাসিন্দা ও চিকিৎসক মুজাম্মিল আহমদ গনাই। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরে আদিল মজিদ নামে আরেক চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করা হয়। গনাই হরিয়ানার ফরিদাবাদের আল ফালাহ হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, ফরিদাবাদের ধাউজ গ্রামে গনাইয়ের ভাড়া বাসা থেকে ৩৫৮ কেজি বিস্ফোরক জব্দ করা হয়।
পুলিশের সূত্র দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছে, গনাই গ্রেপ্তারের পর উমর নবি নামে আরেক চিকিৎসক নিখোঁজ হন। সিসিটিভি ফুটেজের বরাত দিয়ে তদন্তকারীরা বলছেন, লালকেল্লার কাছে বিস্ফোরিত গাড়িতে যাকে দেখা গেছে তিনিই উমর নবি।
সোমবার সন্ধ্যায় নয়াদিল্লির ঐতিহাসিক স্থান লালকেল্লার সামনে গাড়ি বিস্ফোরণে বেশ কয়েকজন নিহত হন। মঙ্গলবার সকালে পৃথক প্রতিবেদনে এএফপি ৮, এনডিটিভি ৯ ও আল জাজিরা ১৩ জন নিহতের কথা উল্লেখ করেছে। এদিন অপরাধ তদন্ত বিভাগের কর্মকর্তারা বিস্ফোরিত একটি গাড়ির ধ্বংসাবশেষের নমুনা সংগ্রহ করেছেন।
বিস্ফোরণের কারণ এখনো জানায়নি পুলিশ। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বিস্ফোরণের কারণে ছড়িয়ে পড়া আগুনে আশপাশের বেশ কয়েকটি গাড়িও পুড়ে গেছে। সোমবার রাতে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সাংবাদিকদের বলেন, নিরাপত্তা বাহিনী সব দিক খতিয়ে দেখছে। ঘটনার কারণ এখনই বলা কঠিন।
মঙ্গলবার ভোরে ঘটনাস্থলে গিয়ে এএফপির সংবাদদাতা দেখতে পান, রাতে পুড়ে যাওয়া গাড়িগুলোর পাশে সাদা কাপড় টানিয়ে রেখেছে পুলিশ। ফরেনসিক ও সন্ত্রাসবিরোধী ইউনিট ঘটনাস্থলে প্রমাণ সংগ্রহ করছে। নয়াদিল্লি জুড়ে জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। বলেছেন, তিনি ইতোমধ্যে অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছেন। এক বিবৃতিতে নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘দিল্লিতে বিস্ফোরণে যারা প্রিয়জন হারিয়েছেন, তাদের প্রতি সমবেদনা জানাই। আহতরা যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন।’ একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে আহতের সংখ্যা ১৯ থেকে ২০ জন উল্লেখ করা হয়েছে।