প্রকাশ: ৮ মে, ২০২১ ১২:৪৮ অপরাহ্ন
 
            
৭ই মে দেশজুড়ে পালিত হয় প্রকৌশলী দিবস। দেশের সর্বস্তরের প্রকৌশলীদের জন্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ এই দিবসটি তারা গুরুত্বের সাথেই পালন করেন। বিশেষ এই দিনটি নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিমত জানার চেষ্টা করেছেন, গণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মোঃ বরাতুজ্জামান স্পন্দন
প্রত্যেকে বলেন ইঞ্জিনিয়ারিং এত সহজ যে এটি পার্কে হাঁটার মতো। তবে কেবল ইঞ্জিনিয়াররা জানেন যে পার্কটিকে জুরাসিক পার্ক বলা হয়। টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের কর্মক্ষেত্র টেক্সটাইল খাত দেশের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড। বাংলাদেশের ৮০ শতাংশেরও বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আসে এখান থেকে। সরকার ইতিমধ্যেই একটি টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় সহ কয়েকটি টেক্সটাইল কলেজ স্থাপন করেছে। তারপরেও চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে।
টেক্সটাইল শিক্ষায় বিভাগীয় শিক্ষক ও প্রযুক্তিবিদের সংকট রয়েছে। নিয়মিত সেমিনার ও পাশাপাশি প্রয়োজনীয় তথ্য এবং দরকারী নির্দেশিকাগুলির অভাবে শিক্ষার্থীরা খুব বেশি অগ্রগতি করতে পারে না। ফলস্বরূপ, খুবই হতাশায় অনেক শিক্ষার্থী বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে চায়। যা দেশের জন্য হুমকিস্বরূপ। তাই প্রকৌশলীদের জন্য উন্নয়নের ভাবনা শুধুমাত্র প্রকৌশল দিবসেই না, সবসময় করা উচিত।

ইমরান মিয়া
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি
ইঞ্জিনিয়ার্সদের কাজ হলো সভ্যতা আর প্রযুক্তির উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা। বর্তমান আধুনিক বিশ্বের পেছনে রয়েছে নানান সেক্টরে ইঞ্জিনিয়ারদের অক্লান্ত পরিশ্রম। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আশানুরূপ মুল্যায়ন নেই আমাদের। আমি কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এ অধ্যয়নত একজন ছাত্র। আমার ক্ষেত্র থেকে সৃজনশীল ও দেশের উন্নয়নমূলক কাজ করা সম্ভব। কিন্তু এজন্য সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা আবশ্যক। আমাদের দেশে প্রচুর শিক্ষার্থী ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে অধ্যয়নরত আছে। কিন্তু এত ছাত্রের জন্য আশানুরূপ কর্মক্ষেত্র নেই। যার জন্য হয়তো দেশে বেকার ইঞ্জিনিয়ারদেরও অভাব নেই। তবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস সঠিক মুল্যায়ন পেলে, ইঞ্জিনিয়াররা বাংলাদেশকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যেতে পারব।

মোঃ রাশেদুল ইসলাম রাশেদ
কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং
গণ বিশ্ববিদ্যালয়
চিন্তা চেতনার সমন্বয়ে উদ্ভাবনী ক্ষমতার বাস্তব প্রয়োগ, জটিল সমস্যার কারিগরি সমাধান ও মানব জীবনকে সহজতর করে তোলার নেপথ্যে থাকেন একজন প্রকৌশলী। উন্নত জগত গঠন এবং দেশের মানুষ ও দেশকে সেবা দেওয়া যার মূলমন্ত্র। একটি দেশের অবকাঠামোগত ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন অনেকটাই নির্ভর করে প্রকৌশলীদের উপর। তবে বর্তমানে বাংলাদেশে অনেক শিক্ষার্থী প্রকৌশল ডিগ্রি নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে। দেশে বিভিন্ন প্রকৌশল সেক্টরের সুযোগ সুবিধার অভাব যার মূল কারণ। কর্তৃপক্ষের এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করা উচিত। দেশের প্রকৌশলীদের একমাত্র জাতীয় পেশাজীবি প্রতিষ্ঠান ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-এর ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী প্রতিবছর ৭ই মে পালিত হয়। দিবসটিকে আইইবি ‘ইঞ্জিনিয়ার্স ডে' হিসেবে প্রতি বছর উৎসবমুখর পরিবেশে পালন করে। দেশের সকল প্রকৌশলীকে 'ইঞ্জিনিয়ার্স ডে' এর শুভেচ্ছা।

সাদমান সাদিক শোভন
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)
এক জনৈক ব্যক্তি বলেছেন, ঢাকা শহরের একটি ৫ তলা বিল্ডিংয়ের ছাদ থেকে একটি ইট নিচে ফেললে হয় এটা এখন বিবিএ, নয়তো সিএসই পড়ুয়া শিক্ষার্থীর মাথায় পরবে। কথাটা তিনি উপহাস করে বললেও সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী হওয়ায় কথাটা ইতিবাচকভাবে নিলাম। কারণ সেক্টরটি এমন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে বলেই সেটা নিয়ে এত আলোচনা-সমালোচনা। সেই সেক্টরটার মূল্য তাহলে কতটুক হতে পারে?
সিএসই এখন দেশের সরকারির পাশাপাশি সকল বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়েও ভালোভাবে পড়ার সুবিধা রয়েছে। বর্তমান যুগ তথ্য প্রযুক্তির যুগ, ডিজিটাল যুগ। তাই আমি মনে করি, তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে এই বিভাগে পড়ালেখা করে নিজের দক্ষতার মাধ্যমে দেশকে আরও উন্নত করা সম্ভব। এই বিভাগে পড়ে আইটি ইন্ডাস্ট্রি থেকে শুরু করে ব্যাংক কিংবা প্রাইভেট কোম্পানি সব জায়গায় চাকরি করতে পারবেন। এমন একটা সুযোগ আছে যেটা অন্যান্য বিভাগে তুলনামূলকভাবে খুব কম।
শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে কাজ শেখার জন্য আরও উন্নত ল্যাবসহ অন্যান্য সু-ব্যবস্থা পেলে আমাদের দেশ থেকেও বিল গেটসের মাইক্রোসফট, মার্ক জুকারবার্গের ফেসবুকের মতো নিত্যনতুন প্রযুক্তির আবিষ্কার বেরিয়ে আসবে বলে মনে করি।

নাসার মাহমুদ জাহিন 
সি এস ই (৩য় বর্ষ)
স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ