ঢাকা, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩২, ২৪ জ্বমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

জকসুতে ছাত্রলীগ নেত্রী নেলী এখন ছাত্রদলের প্যানেলে প্রার্থী


প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর, ২০২৫ ০৮:২৪ পূর্বাহ্ন


জকসুতে ছাত্রলীগ নেত্রী নেলী এখন ছাত্রদলের প্যানেলে প্রার্থী

জবি প্রতিনিধি: বিগত ৫ আগস্টের আগেও ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেত্রী। ছাত্রলীগ নেতার প্রেমিকা হওয়ায় ভর্তি হওয়ার পরপরই অবৈধভাবেই ওঠেন হলে। এরপর বনে যান ছাত্রীহলের ছাত্রলীগের নেত্রীদের ডানহাত। তবে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরই অনুপ্রবেশ করেন ছাত্রদলে। বনে যান ছাত্রদলের প্রথম সারীর নেত্রী। আসন্ন জকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের প্যানেলেই হল সংসদে আসছেন ছাত্রলীগের সেই নেত্রী ভূমি আইন ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০২১-২২(১৭ ব্যাচ) সাদিয়া সুলতানা নেলী। ছাত্রদলসহ হলে গড়ে তুলেছেন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের শক্ত বলয়ও। জকসু নির্বাচন নিয়ে এখন নিয়মিত করছে গোপন বৈঠকও।

ছাত্রলীগ নেতার প্রেমিকা থেকে হলের ত্রাস-
সাদিয়া সুলতানা নেলী ১২ ব্যাচের এক ছাত্রলীগ নেতার (ময়মনসিংহ এলাকা থেকে ছাত্রলীগের ক্যান্ডিডেট) প্রেমিকা ছিলেন। সেই সূত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের এডমিশন থেকেই (ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ভাষ্য) অবৈধভাবে ছাত্রীহলে উঠানো হয় সাদিয়াকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরবর্তীতে জবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইনের প্যানেলে ছাত্রীহলে সক্রিয় রাজনীতি করতেন। আক্তারের প্যানেলের ছাত্রলীগ নেত্রী মিথি-রিশাদদের ডান হাত খ্যাতো এই সাদিয়া সুলতানা হলের সর্বোচ্চ সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন। সাদিয়া সুলতানাসহ হল ছাত্রলীগের নেত্রীদের সঙ্গে বিভিন্ন প্রোগ্রাম ও আড্ডার ছবি সাংবাদিকদের হাতে এসেছে।

যেভাবে ছাত্রদলে সাদিয়া সুলতানা নেলী: আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর সম্পূরক শিক্ষা বৃত্তি, আবাসন ও দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের দাবির আন্দোলনে সাদিয়া সুলতানাসহ শিক্ষার্থীদের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। দল মত নির্বিশেষে সকল শিক্ষার্থীদের দাবির এ আন্দোলনের সেই ভিডিওকে পুঁজি করে ছাত্রদলে সক্রিয় রাজনীতিতে ঢুকে পড়েন সাদিয়া সুলতানা। 

ছাত্রদলেও ছাত্রীহলে কর্মী সংকট থাকায় তাকে সুযোগ দেয়া হয়। এরপরই ছাত্রলীগের দ্বিতীয় সারীর নেত্রী থেকে ছাত্রদলের প্রথম সারীর নেত্রী বনে যান সাদিয়া। তবে সম্প্রতি জকসু নির্বাচনে সাদিয়া দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলে ও ছাত্রদলের রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার খবরে তীব্র সমালোচনাও করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও। কেউ কেউ বলেন, এটা ছাত্রলীগের একটি কৌশল।
 
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিসংখ্যান বিভাগ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন আলম ফেসবুকে সাদিয়ার ছবি পোস্ট করে লেখেন, 'আমাদের ছাত্রলীগের ছোট বোন ছিল সাদিয়া। সেই সাথে বড় ভাইয়ের গার্লফ্রেন্ড ছিলো। গার্লফ্রেন্ডের কোটায় হলেও উঠছিল। এখন তাকে ছাত্রদলের মিছিলের সামনের সারিতে দেখা যায় । সে এখন জকসুর হট ক্যান্ডিডেট।' এই পোস্টে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ছাত্রলীগের ছোট বোনের জন্য শুভ কামনা জানিয়ে কমেন্ট করতেও দেখা যায়। ইভা সরকার নামে জবি ছাত্রলীগের নেত্রী সাদিয়া সুলতানা নেলিকে নিয়ে শাহীন আলমের পোস্ট শেয়ার দিয়ে লেখেন, 'ছাত্রলীগের রুপালী অর্জন ছোটবোনের (সাদিয়া) জন্য শুভ কামনা রইলো।'

এদিকে ছাত্রলীগের একজন নেত্রী জানান, 'সাদিয়া সুলতানা নেলী যখন এ্যাডমিশন নেয় তখন থেকেই ছাত্রীহলে থাকতো। মেসে উঠে নাই কখনো। আগে ছাত্রলীগের ব্যানারে তৃতীয় সারিতে দাঁড়াতে হতো। এখন ১ম সারি পাইছে। অবাকই হলাম। সাদিয়া সুলতানা এখনো ছাত্রলীগের ওই নেতার প্রেমিকা বলেও নিশ্চিত করেন তিনি।'

বর্তমানেও হলের একচ্ছত্র দাপট সাদিয়ার: এদিকে ছাত্রদলে ঢুকে ফের ছাত্রীহলে দাপট দেখাচ্ছেন সাদিয়া সুলতানা নেলী। জবি ছাত্রদলের সদস্য সচিব সামসুল আরেফিনের বর্তমানে একনিষ্ঠ কর্মী সাদিয়া। তবে এর পেছনে হলে গড়ে তুলেছেন ছাত্রলীগের নেত্রীদের এক নিজস্ব বলয়। আড্ডার ছলে নিয়মিত তাদের সাথে নির্বাচন কেন্দ্রীক বৈঠক ও ভোটের রাজনীতির ম্যাকানিজম করছেন তিনি। তাদের ভিতর একজন সাদিয়ার ডানহাত খ্যাতো ছাত্রলীগের আরেক নেত্রী ইসরাত জাহান লামিয়া। 

ভোলা জেলার মেয়ে লামিয়া জবি ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজীর একনিষ্ঠ কর্মী। লামিয়াও ছাত্রলীগের হয়ে প্রথমবর্ষে ছাত্রী হলে উঠেন। ইব্রাহীম ফরাজীর সাথে বিভিন্ন প্রোগ্রাম ও ফেসবুক পোস্টও রয়েছে। ইব্রাহীম প্যানেলের নেত্রী স্বর্ণা-নিপুনদের প্যানেলে থেকে ছাত্রীহলে রাজত্ব কায়েম করেছেন। সরকার পতনের পরও সাদিয়া সুলতানা-ইসরাত লামিয়াসহ তাদের প্যানেলে ছাত্রলীগের তোলা মেয়েদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। রাতে আড্ডার নামে মিটিং করতেও দেখা যায়। 
তাদের প্যানেলে ছাত্রলীগে এসব মেয়েদের তালিকা করছে খোদ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাও। নির্বাচন কেন্দ্র করে হলের প্রত্যেক ফ্লোরে ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের কর্মীদের সেট করেছেন নেলী। গত বুধবার জকসুর নির্বাচন উপলক্ষ্যে ছাত্রীহলে মেয়েদের বিভিন্ন উপহার সামগ্রী দিতে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সাথে সামনের কাতারেও ছিলেন নেলী। 

ছাত্রলীগ নেত্রী থেকে ছাত্রদলের নেত্রী বনে যাওয়ার বিষয়ে সাদিয়া সুলতানা নেলী বলেন, “কোন প্যানেলে নির্বাচন করব এখনও তা সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে ছাত্রী হলে হল সংসদ নির্বাচনে দাঁড়াবো বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” 

ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে পরবর্তীতে ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে কিভাবে যুক্ত হলেন এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আমি ছাত্রলীগ করতাম তো সবাই জানে। ২০২৩ সালে যখন পুরো ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের তখন নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য আমাকে এটা করতে হয়েছিল। ছাত্রলীগের সাথে থাকলে তারা হলে একটা সিট পাইয়ে দেবে এজন্য আমি ছাত্রলীগ করেছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে জুলাই আন্দোলনের সময়ে আমি তাদের বিরুদ্ধে স্লোগানও দিয়েছি। 

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সামসুল আরেফিন বলেন, "যে মেয়ে জুলাই আন্দোলনের সময়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে তাকে আমরা পক্ষ বিবেচনা করব। সে ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তি।"

এ সময় ছাত্রলীগের ব্যাপারে আপনাদের অবস্থান কি জানতে চাইলে তিনি বলেন "জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছাত্রলীগকে স্বাগতম। ওনারা অত্যন্ত


   আরও সংবাদ