প্রকাশ: ১২ জুন, ২০২১ ০২:০২ পূর্বাহ্ন
 
            
নোবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) সর্ববৃহৎ ১০তলা একাডেমিক ভবন-৩ এর নির্মাণ কাজ। প্রকল্পটির ৩৭ মাস সময় পার হলেও শেষ হয়েছে ২০ শতাংশেরও কম কাজ। যেখানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বেঁধে দেয়া হয়েছিলো ৩০ মাস সময়।
বর্তমানে ভবনের দ্বিতীয় তলার ছাদ ঢালাই সম্পন্ন করে তৃতীয় তলার আংশিক কাজ শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় মেয়াদে বৃদ্ধি করা হয় সময়। দেখা যায়, অল্প কিছু শ্রমিক নিয়ে চলছে প্রকল্পটির কাজ। অধিকাংশ সময় শ্রমিকের অভাবে বন্ধ থাকে নির্মাণ কাজ।

জানা যায়, ২০১৮ সালের এপ্রিলে টেন্ডার আহ্বান করে জি কে স্বপনের একটি প্রতিষ্ঠানকে প্রকল্পটির কাজ দিয়েছিলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মূল প্রকল্পের ঠিকাদারি জিকেবিএল (জে.ভি) নামের একটি প্রতিষ্ঠান নিলেও প্রকল্পের ইনচার্জ মইনুদ্দিন চৌধুরীর সাথে এখন পর্যন্ত যোগাযোগ করেনি প্রতিষ্ঠানটির মালিক জি কে স্বপন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নের জন্য যেসকল সামগ্রী ক্রয় করতে হয় তার জন্য ব্যাংক থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিয়ে পারফরমেন্স গ্যারান্টি নিতে হয়। পরবর্তীতে উক্ত পারফরমেন্স গ্যারান্টি দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশল দপ্তর থেকে বিল নিতে হয়। কিন্তু বর্তমান প্রকল্পটির পারফরমেন্স গ্যারান্টির মেয়াদ কয়েকমাস আগে শেষ হলেও এখন পর্যন্ত নতুনভাবে ব্যাংক থেকে পারফরমেন্স গ্যারান্টি নেয়নি প্রকল্প প্রতিষ্ঠানটি। যতদিন পর্যন্ত ব্যাংক থেকে পারফরমেন্স গ্যারান্টি না নিবে ততদিন পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নের জন্য বিল নিতে পারবেনা প্রতিষ্ঠানটি।
আরও জানা যায়, নতুনভাবে বিল না নিতে পারায় ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারেনি প্রতিষ্ঠান। ফলে দীর্ঘদিন যাবত এমনভাবে কাজ অগ্রসর হচ্ছে যেটিকে বন্ধ বললেই চলে। এমনকি কয়েক লাখ টাকার সিমেন্ট ও রড অযত্নে পড়ে আছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এগুলো কাজে লাগাতে না পারলে জিনিসপত্রের ব্যাপক ক্ষতির আশংকা রয়েছে।
এমন ধীরগতির কাজের জন্য শ্রমিকদের অনুপস্থিতির উপর দায় চাপাচ্ছেন প্রকল্পটির তদারক আবু মুসা ফাতহুলবারী টুটুল। করোনা শুরু হওয়ার পর শ্রমিকরা বাড়ি চলে গেছে এখন তারা ফিরে আসলেই কাজগুলো দ্রুতগতিতে অগ্রসর হবে বলে জানান তিনি।
এই প্রকল্পটির জন্য খুব শিগগিরই হেড অফিসে মিটিং করা হবে এবং খুব শিগগিরই নতুনভাবে কাজ শুরু করা হবে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির প্রকল্প ম্যানেজার মোহাম্মদ আরিফ।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী জিয়াউদ্দিন হায়দার বলেন, "আমরা কাজ শুরু করার জন্য প্রকল্প প্রতিষ্ঠানের সাথে বারবার যোগাযোগ করেছি। তারা আমাদের প্রতিবার আশ্বাস দিয়েও কাজ শুরু করেনি। গত কয়েকদিন আগে ফার্মের কাছে অফিসিয়াল নোটিশ দিয়েছি সেই নোটিশের ফলাফল এখনো আমাদের নিকট পৌঁছায়নি"।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ দিদার-উল-আলম বলেন, প্রকল্পটি নিয়ে আমাদের কাছে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে আমরা বিভিন্ন মেয়াদে সময় বেঁধে দিয়েও কাজের তেমন কোনো অগ্রগতি পাইনি।
তিনি আরো বলেন, আমরা প্রস্তাব করেছি তারা যদি কাজ করতে না পারে তাহলে তাদের পরিচিত অন্য প্রকল্প প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তর করে দিতে অথবা বর্তমানে যে তিন তলা নির্মাণ করা হয়েছে এটি ক্লাসরুমের জন্য প্রস্তুত করে দিতে। দুটি প্রস্তাবের কোনো প্রস্তাবে তারা সাড়া দেয়নি।
আরো পড়ুনঃ স্কুল-কলেজের ছুটি বাড়ল ৩০ জুন পর্যন্ত
এছাড়া কাজটি দ্রুত শুরু করতে বিভিন্ন মাধ্যমে চেষ্টা করছেন বলে জানান উপাচার্য প্রফেসর ড. মো: দিদার-উল-আলম।