প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২২ ০৫:৪৩ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালাতে নিষেধ করাই ফুলছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম আশিকুর রহমান রকিকে হত্যা করেছিলেন দুর্বিত্তরা বলে দাবি করেন তার সহপাঠীরা। তারা বলেন, রকি হত্যাকাণ্ডের ৮ মাস পার হয়ে গেলেও এখনো তার বিচার হয়নি। তাদের বাদী কোনো অদৃশ্য শক্তির জন্য এতো দিন পার হয়ে গেলেও মামলার চার্টশিট দিচ্ছে না পুলিশ।
আজ শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম আশিকুর রহমান রকি হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত চার্জশিট প্রদান ও হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত করার দাবিতে ঢাকায় বসবাসকারী গাইবান্ধাবাসীর মানববন্ধন করেন।
এতে রকির পরিবারের সদস্যরা সহ একাত্মতা প্রকাশ করেন নিহত রকির বন্ধু মহল, স্থানীয় ছাত্রলীগ ও এলাকাবাসী। রকি হত্যার দ্রুত চার্জশিট গঠন ও হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত করার দাবি করেন তারা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, রকি হত্যাকাণ্ডের ৮ মাস অতিবাহিত হলেও চার্জশিট প্রদান করা হচ্ছে না। আসামিদের অনেকেই গ্রেপ্তার হলেও আবার তাদের ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রশাসন স্থানীয় প্রভাবশালীদের সঙ্গে আঁতাত করে আসামিদের রক্ষা করার পাঁয়তারা করছে। হত্যাকারীদের রক্ষার কোনো পাঁয়তারা গাইবান্ধাবাসী মেনে নেবে না। গাইবান্ধাবাসীসহ দেশের মানুষ হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ সাজা দেখতে চায়।
তারা আরও বলেন, একের পর এক হত্যা হলেও হত্যাকারীরা সাজা পাচ্ছে না। ফলে এলাকায় অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই হত্যা-সন্ত্রাসের লাগাম টানতে অপরাধীদের দ্রুত বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক সাজার আওতায় নিয়ে আশার বিকল্প নেই। মানববন্ধন থেকে অবিলম্বে রকি হত্যার চার্জশিট গঠন ও দ্রুত বিচারের মাধ্যমে সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।
নিহত রকির বড় ভাই আতিকুর রহমান রুস্তম বলেন, ছোট ভাই হত্যার বিচার চেয়ে পুলিশ সহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের দারে দারে ঘুরেছি। কিন্তু কোনো পাত্তা পাইনি। আমার ভাই তো কারর ক্ষতি করে নি। সে ছাত্রলীগের রাজনীতি করত, এটাই কি তার অপরাধ। এই জন্যই কি তার হত্যা বিচার হবে না। আমার ছোট ভাইয়ের হত্যাকারীরা বাহিরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করা হলেও পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
আতিকুর রহমান রুস্তম বলেন, ছোট ভাই রকি হত্যার বিষয় নিয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য তার বাসায় এসেছি। আমরা এসেছি ছাত্রলীগের অভিভাবক আল নাহিয়ান সঙ্গে বিষয়টি বলার জন্য। কিসের জন্য ছাত্রলীগের কর্মী হত্যার মামলা নিয়ে পুলিশ গড়িমসি করছে।
হত্যাকাণ্ডের পরের দিন নিহত রকির বড় ভাই আতিকুর রহমান রোস্তম বাদী হয়ে এ ফুলছড়ি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এই মামলায় গ্রেপ্তার হন কাঞ্চন, ইমরান, রবিন, সোহাগ, মানিক, নাহিদ ও সৈকত। তবে এই হত্যা মামলার আসামি কাঞ্চন, ইমরান ও সোহাগ ছাড়া বাকিদের মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।
পরে ফুলছড়ি উপজেলা যুবলীগ নেতা রেদোওয়ান আশরাফ এলিচের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নিয়াত চৌধুরী, নিহতের বড় ভাই আতিকুর রহমান রুস্তম ও শরিফুল আনোয়ার স্বজ্জন প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১১ জুলাই ফুলছড়ি উপজেলা শহরের কঞ্চিপাড়ায় নিজেদের বাসায় ফেরার পথে পূর্ব পাড়ায় উপজেলার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম আশিকুর রহমান রকির ওপর স্থানীয় সন্ত্রাসী কাঞ্চন, ইমরান, রবিন ও সোহাগ নৃশংস হামলা করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকগণ তাকে মৃত ঘোষণা করেন।