ঢাকা, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ ফাল্গুন ১৪৩২, ৯ জ্বমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

‘একুশ’ বিশ্বের মানুষের কাছে এখন সংগ্রাম ও মর্যাদার প্রতীক: রাষ্ট্রদূত


প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২২ ০৫:২২ পূর্বাহ্ন


‘একুশ’ বিশ্বের মানুষের কাছে এখন সংগ্রাম ও মর্যাদার প্রতীক: রাষ্ট্রদূত

নিজস্ব প্রতিবেদক: জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। পরে তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন ও ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে, ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে ঘোষণা করে। ফলে ‘একুশ’ এখন সার্বজনীন, ‘একুশ’ এখন পুরো বিশ্বের। ‘একুশ’ এখন বিশ্বের মানুষের কাছে সংগ্রাম ও মর্যাদার প্রতীক। ‘একুশ’ আমাদের প্রেরণা, ‘একুশ’ আমাদের শিক্ষা দেয় অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করার।

আজ সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিনম্র শ্রদ্ধা, যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগম্ভির পরিবেশে জাপানের টোকিও বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে। এ সময় ভাষা শহীদদের স্মরণে দূতাবাসের অস্থায়ী শহীদ মিনার বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে সকালে অনুষ্ঠানমালা শুরু হয়।

জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা- কর্মচারী পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। অনুষ্ঠানের পরের অংশে দূতাবাস প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় সঙ্গীত বাজানোর সঙ্গে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন। অতঃপর ভাষা শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

চলমান করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ ও জাপান সরকার কর্তৃক জারিকৃত বিভিন্ন দিক নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে দূতাবাস এবছর অনলাইনে শহিদ দিবসের অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। শহীদ দিবস উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দেয়া বাণী পাঠ করা হয়। এ ছাড়া ভাষা শহিদদের আত্মার মাগফেরাত ও বাংলাদেশের সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

অনলাইন আলোচনায় অংশ নেন জাপান বাংলাদেশ সোসাইটির (জেবিএস) প্রেসিডেন্ট ও রাষ্ট্রদূত মাসাতো ওয়াতানাবে, জেবিএস সদস্য ও সেক্রেড হার্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মাসাকি ওহাসি, রাষ্ট্রদূত মাতসুহিরো হরিগুচি ও টোকিও ইউনিভারসিটি অব ফরেন স্টাডিস-এর অধ্যাপক কিওকো নিওয়া।

এ ছাড়া ভিডিও বার্তায় জাপানিজ ন্যাশনাল কমিশন ফর ইউনেস্কোর ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল হিরোমি কাওয়ামুরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্য আলোচনা করেন। জাপান প্রবাসী বাংলাদেশি কমিনিউটির নেতৃবৃন্দও এই আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা, বিলুপ্তপ্রায় ভাষা সংরক্ষণ ও তাদের মর্যাদা রক্ষার উদ্যোগ গ্রহণ, তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করণ, নৃ-গোষ্ঠীদের ভাষা ও বর্ণমালাকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষায় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য বক্তাগণ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

বক্তাগণ বাংলা ভাষাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। বাংলা ভাষাসহ বিশ্বের অন্যান্য ভাষাকে সম্মান প্রদর্শনের জন্য বক্তারা বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানে ভাষা আন্দোলন ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের উপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। জাপানি নাগরিক ও প্রবাসী বাংলাদেশিসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অতিথি এবং দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।


   আরও সংবাদ