প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২২ ০৬:৫৩ পূর্বাহ্ন
কূটনৈতিক প্রতিবেদক: শ্রীলঙ্কায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার তারেক আরিফুল ইসলাম বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেওয়ার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করেন। শিক্ষামন্ত্রী দীনেশ গুনাবর্ধনে ও বাণিজ্য মন্ত্রী বান্দুলা গুনাবর্ধনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্যাপনে শ্রীলঙ্কা সরকারকে সম্পৃক্ত করে সৃষ্টিশীল অনুষ্ঠানের আয়োজন করার জন্য বাংলাদেশ হাইকমিশনকে ধন্যবাদ জানান। তাঁরা মাতৃভাষা পরিচর্যার জন্য শ্রীলঙ্কা সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের বিষয় তুলে ধরেন।
আজ সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে বাংলাদেশ হাইকমিশন কলম্বোর ঐতিহাসিক স্বাধীনতা চত্বরে বহু ভাষাভাষী বর্ণাঢ্য এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” পালন করেন।
তবে শ্রীলঙ্কার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ উদ্যাপনে হাইকমিশনের সহযোগী ছিল জাতিসংঘের স্থানীয় দপ্তরসূমহ ও শ্রীলঙ্কা স্কাউটস অ্যাসোসিয়েশন।
এই ভাষার অনুষ্ঠানে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসা, শিক্ষামন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রীসহ অন্যান্য মন্ত্রী বর্গ, রাষ্ট্রদূতবৃন্দ ও শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন জেলা থেকে আগত প্রায় তিন শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী এতে অংশ নেন।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে কেন্দ্র করে হাইকমিশন দু'মাস ব্যাপী শ্রীলঙ্কা জুড়ে ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে চিত্রাঙ্কন, রচনা ও কবিতা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। আজকের অনুষ্ঠানে উক্ত প্রতিযোগিতায় চূড়ান্তভাবে বিজয়ী পনেরো জন ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসা ও অন্যান্য মন্ত্রিবর্গ সার্টিফিকেট ও পুরস্কার প্রদান করেন।
"মা-মাতৃভাষা-মাতৃভূমি" শীর্ষক প্রতিপাদ্য অনুসারে আয়োজিত এ প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে শ্রীলঙ্কার শিশু কিশোররা বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্য সম্পর্কে জানান হয়।
অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ ছিল বিভিন্ন ভাষায় একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। কলম্বো রাশিয়ান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, ভারতীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, মালদ্বীপ শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, সার্ক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, অলিয়স ফ্রসেস, শ্রীলঙ্কার স্থানীয় শিল্পী ও বাংলাদেশ হাই কমিশনের শিশুরা তাঁদের স্ব স্ব দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও মাতৃভাষার প্রতি তাঁদের ভালোবাসা-নৃত্য, সংগীত ও আবৃত্তির মাধ্যমে তুলে ধরেন।
সাংস্কৃতিক পরিবেশনা শেষ হয় বাংলাদেশ হাই কমিশনের শিশু শিল্পীদের সমবেত ভাবে গাওয়া একুশের অমর গান "আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি" গানটির মাধ্যমে। অনুষ্ঠানে আগত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ক্যানভাসে রংতুলি দিয়ে যার যার মাতৃভাষায় দিবসটি উপলক্ষে তাঁদের অভিব্যক্তি তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে ভাষা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
দিবসের শুরুতে চ্যান্সারীতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে ভাষা শহীদদের উদ্দেশ্যে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।
অনুষ্ঠানের শেষে বাংলাদেশ হাইকমিশন ও কলম্বো বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে "বহু ভাষাভাষী শিক্ষাঙ্গনে প্রযুক্তির ব্যবহার: সমস্যা ও সম্ভাবনা" শীর্ষক ওয়েবিনার এর আয়োজন করা হয়। তা ছাড়া শ্রীলঙ্কা স্কাউটস অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে একটি রক্তদান কর্মসূচিরও আয়োজন করা হয়।