প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ২১:২৮ অপরাহ্ন
বশেমুরবিপ্রবি থেকে খাদিজা জাহান : ঝোপঝাড় ও লতাগুল্মের মাঝে ভগ্ন ছাউনিযুক্ত টিনশেড ভবনে প্রায় তিনবছর যাবৎ চলছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের কার্যক্রম।
এ বিভাগটিতে তিনটি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুম, শিক্ষকদের রুম ও প্রশাসনিক কার্যক্রমের জন্য মাত্র দুটি রুম বরাদ্দ। তারমধ্যে একটি কক্ষ ক্লাসরুম,অন্য কক্ষ কাঠের পার্টিশন দিয়ে একদিকে ক্লাসরুম এবং অন্যদিকে শিক্ষকদের কক্ষসহ প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যবহার হয়।
এ বিষয়ে বিভাগটির সভাপতি তছলিম আহম্মদ জানান, “রুম সংকটের জন্য বিভাগটিতে শিক্ষকদের এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমের জন্য কোনো আলাদা কক্ষ নেই। একটি রুমেই সকলকে বসতে হয়। এছাড়া চারপাশের অবস্থার কারণে ক্লাস চলাকালীন সময়ে প্রায়ই ক্লাসরুমে কুকুর, গরু ছাগল এমনকি মাঝে মাঝে সাপও ঢুকতো৷
একবার শিক্ষার্থীরা ক্লাসরুম থেকে একটি বড় আকারের সাপও মেরেছে। এরপর গত মার্চে আমরা নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রশাসনকে জানিয়েছিলাম কিন্তু বিষয়টির কোনো সমাধান হয় নি।”
তিনি আরও বলেন, “এখানে শিক্ষক, শিক্ষাথীসহ কর্মকর্তা, কর্মচারীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিভাগের কার্যক্রম পরিচালনা করেন। যদি ক্লাসে এসে কিংবা অফিসিয়াল কার্যক্রম পরিচালনা করতে এসে সাপের কামড়ে কারো মৃত্যু হয় আমরা তখন কি উত্তর দিবো?
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছনের অংশে অবস্থিত হওয়ায় বিভাগটিতে নেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা।ফলে দূর্বল নিরাপত্তাব্যবস্থার সুযোগ নিয়ে সম্প্রতি এই বিভাগ থেকে দুটি কম্পিউটার চুরি হয়েছে।
তাছাড়া উক্ত কক্ষ থেকে মাত্র দশ হাত দূরে একটি খোলা টয়লেট আর পাঁচ হাত দূরে নির্মাণশ্রমিকদের একটা ঝুপড়ি ঘর দেখতে পাওয়া গেছে।
নিরাপত্তাহীনতার কথা উল্লেখ করে বিভাগটির সভাপতি তছলিম আহম্মদ জানান,নিরাপত্তার অভাবে বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) প্রিন্টার,ল্যাপটপ এবং শিক্ষার্থীদের সনদপত্রসহ বিভাগের মূল্যবান দ্রব্যাদি রেজিস্ট্রার দপ্তরে হস্তান্তর করেছেন।
এদিকে ক্লাসরুম সংকট ছাড়াও বিভাগটিতে রয়েছে শিক্ষক সংকট। বিভাগটি থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী ১৭৬ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে বিভাগটিতে শিক্ষকের সংখ্যা মাত্র চারজন।এরমধ্যে দুজন শিক্ষাছুটিতে রয়েছেন। ফলে মাত্র দুজন শিক্ষকের পক্ষে এত অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থীদের শিক্ষাকার্যক্রম চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে বশেমুরবিপ্রবির উপাচার্য ড. এ. কিউ. এম মাহাবুব বলেন, “তাদের সমস্যার বিষয়ে আমি অবগত হয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মানাধীন ভবনসমূহ তৈরির পর এবং নতুন শিক্ষক নিয়োগের পর এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
তিনি আরো জানান, “ইতোমধ্যে বিভাগটির আশপাশের ঝোপঝাড় পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু করা হয়েছে। আজ শুক্রবার থেকে পরিচ্ছন্নতার কাজ আরো জোরদার শুরু হবে এবং টয়লেট ও ঝুপড়ি গুলো সরিয়ে ফেলা হবে হবে"।
প্রসঙ্গত, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে বশেমুরবিপ্রবিতে যাত্রা শুরু করে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ।