ঢাকা, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২, ২৬ জ্বমাদিউল সানি ১৪৪৭

২০ অক্টোবর জবির ১৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর চমক হল উদ্বোধন


প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর, ২০২০ ২১:৩৪ অপরাহ্ন


২০ অক্টোবর জবির ১৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর চমক হল উদ্বোধন

জবি প্রতিনিধি : ক্ষুদ্র পাঠশালা থেকে ব্রাহ্ম স্কুল, স্কুল থেকে কলেজ, কলেজ থেকে বিশেষ অধ্যাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তরিত হওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) রয়েছে শতাব্দীর ইতিহাস। 

বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে বাংলাবাজারে গড়ে উঠা দেড়শ বছরেরও পুরাতন দেশের প্রাচীন এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অতীতকাল থেকেই বাঙালির শিক্ষা, সংস্কৃতি, আন্দোলন-সংগ্রাম ও ইতিহাস ঐতিহ্যের ধারক বাহক হিসেবে দ্যুতি ছড়িয়ে আসছে।

২০০৫ সালের ২০ অক্টোবর কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তরের পর খুব কম সময়ের মধ্যেই দেশের উচ্চ শিক্ষার আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে সবার আগ্রহের জায়গায় পরিণত হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। যার কারণে প্রতিবছর ভর্তি পরিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক চাকরির পরিক্ষা, ক্রীড়া, দেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য লালন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভালো অবস্থানের কারণে সগৌরবে মাথা উঁচু করে চলছে প্রতিষ্ঠানটি। 

ইংলিশ চ্যানেল ছয়বার পাড়ি দিয়ে বিশ্বরেকর্ড করা ব্রজেন দাসের পড়া এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী মারজান আক্তার প্রিয়া সম্প্রতি ২০১৯ এস এ গেমসে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম স্বর্ণপদক জয় করেছেন। সীমিত সময়ে নাম করা এ বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে নতুন সৃষ্ট সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে রোল মডেল হিসেবে পরিণত হয়েছে।

তবে দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে আলো ছড়ালেও নানা সংকটের মধ্যে এগিয়ে চলছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। সংকটের তালিকায় আবাসন সমস্যা, সীমিত পরিসরের ক্যাম্পাস, অনুন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা, অপ্রতুল গবেষণা কাঠামো, প্রয়োজনীয় ল্যাব সংকট, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিকাশে প্রয়োজনীয় জায়গা না থাকা অন্যতম দিক। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে আধুনিক মেডিকেল সেন্টার নির্মান, প্রস্তাবিত আধুনিক ল্যাব ও কেরাণীগঞ্জের তেঘরিয়ায় ২০০ একরের নতুন ক্যাম্পাস তৈরি হলে সকল সংকট নিরসন হবে বলে মনে করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। 

এদিকে প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ পনেরো বছর পর আগামীকাল মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে হল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ঘুচবে অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় নামক ট্যাগ। করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস অনাড়ম্বরভাবে পালন করা হলেও এবারের চমক বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রী হল 'বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল' উদ্বোধন। কারণ হল নির্মাণে প্রথমে দুই বছর (২০১১-২০১৩) নির্ধারণ করা হলেও তা শেষ করতে দীর্ঘ ১০ বছর সময় লেগে যাওয়ায় বরাবরই হতাশ ছিলেন শিক্ষার্থীরা। তাই এবার বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে প্রায় ১০০০ ধারণ ক্ষমতা বিশিষ্ট এ ছাত্রী হলের উদ্বোধন নিয়ে শিক্ষার্থীদের বাড়তি আগ্রহ দেখা গেছে।

এর আগে করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে ও ভার্চুয়ালভাবে দিনটি উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আজ সকাল ৯.১০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে জাতীয় পতাকা, বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনা করা হবে এবং ৯.১৫ মিনিটে বেলুন উড়িয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের শুভ উদ্ধোধন করা হবে। এরপর সকাল ৯.৩০ মিনিটে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের উদ্ধোধন করবেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান। এছাড়া ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল আলোচনাসভা এবং সংগীত বিভাগের উদ্যোগে পরবর্তীতে ভার্চুয়াল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৮৫৮ সালে ব্রাহ্ম স্কুল নামে যাত্রা শুরু করে এই প্রতিষ্ঠানটি। ১৮৭২ সালে জমিদার কিশোরীলাল রায় চৌধুরী তার বাবার নামে জগন্নাথ স্কুল নামকরণ করেন। ১৯০৮ সালে এটি প্রথম শ্রেণির কলেজের রূপ পায়। দেশ স্বাধীনতার আন্দোলন,সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা এই প্রতিষ্ঠানটি ২০০৫ সালে জাতীয় সংসদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫ পাশের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়।


   আরও সংবাদ