প্রকাশ: ২ ফেব্রুয়ারী, ২০২১ ১৩:১৮ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট সেজে এবং ম্যাজিস্ট্রেটের গানম্যান পরিচয়ে চাঁদাবাজির সময় জাকির সুপার মার্কেটের সামনে থেকে কর্পোরেশনের চেইনম্যান নোবেল হোসেন মিঠু ও নগর ভবন ভবনের আনসার ক্যাম্প ইনচার্জ ও ডিউটি পরিদর্শক পিসি শহিদুল ইসলামকে গত রবিবার রাতে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
সোমবার কর্পোরেশনের চেইনম্যান নোবেল হাসান মিঠু ও আনসার পিসি শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে বংশাল থানা মামলা দায়ের করা হয়।
এ ধরনের অনৈতিক আচরণ এবং দাপ্তরিক শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হওয়ায় চেইনম্যান নোবেল হাসান মিঠুকে ডিএসসিসি হতে চাকরীচ্যুত করা হয়েছে। একই অপরাধে আনসার পিসি শহিদুল ইসলামের কর্মকাণ্ড অবহিত করে তার নিয়ন্ত্রণকারী দপ্তরে আনসার ও ভিডিপির জোন অধিনায়কে অবহিত করে পত্র প্রদান করা হয়েছে।
কর্পোরেশনের সচিব আকরামুজ্জামান স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ চেইনম্যান মিঠুকে চাকরীচ্যুত করা হয়েছে এবং “ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কর্মচারী চাকুরী বিধিমালা, ২০১৯ এর বিধি ৬৪ (২) মোতাবেক জনস্বার্থে এবং কর্পোরেশনের স্বার্থ রক্ষার্থে সম্পত্তি বিভাগের চেইনম্যান নোবেল হাসান মিঠুকে চাকুরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে।” বলে মিঠুর অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়।
জনস্বার্থে জারিকৃত এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে উল্লেখ করে আদেশে আরও বলা হয়, "তিনি বিধি মোতাবেক ৯০ দিনের বেতন নগদ প্রাপ্য হবেন। তাকে এ কর্পোরেশনের হিসাব বিভাগের অতিসত্বর যোগাযোগ করে ৯০ দিনের বেতন বুঝে নেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।"
উল্লেখ্য, নোবেল হাসান মিঠু বিগত (০২ ডিসেম্বর) কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ ইরফান আহমেদ এর পেশকার হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে কর্মরত ছিলেন। নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার পর দিন থেকেই তার অদক্ষতা, অপেশাদার আচরণ ও মানুষের সাথে দুর্ব্যবহারের কারণে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইরফান উদ্দিন আহমেদ চেইনম্যান মিঠুকে একাধিকবার সতর্ক করে। কিন্তু তার আচরণ ও ব্যবহারে কোন পরিবর্তন না হওয়ায় গত (১০ ডিসেম্বর) তার কাছে রক্ষিত মোবাইল কোর্টে সহযোগিতার সরঞ্জামাদি বিশেষত জরিমানা বই, মোবাইল কোর্টে ব্যবহৃত আইনের বই, সাজা পরোয়ানার কপি, আসামীর স্বীকারোক্তি ফর্ম ইত্যাদি ফিরিয়ে নেওয়া হয় এবং তাকে মোবাইল কোর্ট বা উচ্ছেদ কাজে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়।
সেই মোতাবেক (১০ ডিসেম্বর) থেকে চেইনম্যান মিঠুকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইরফান উদ্দিন উদ্দিন আহমেদের সাথে দাপ্তরিক কার্যক্রমে থেকে বিরত থাকতে বলা হয়।
পরবর্তীতে বিগত ৩১ জানুয়ারি রাতে বংশাল থানা হতে কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইরফান উদ্দিন আহমেদকে অবগত করে বলা হয়, জাকির সুপার মার্কেটের সামনে ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ে চাঁদাবাজি করার সময় স্থানীয় লোকজন মিঠু নামীয় কর্পোরেশনের একজন চেইনম্যান ও পিসি শহীদুল ইসলামকে হাতেনাতে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে এবং এ বিষয়ে তৎপরবর্তী করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইরফান উদ্দিন আহমেদ বংশাল থানার ওসিকে ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ে চাঁদাবাজী ও চাঁদাবাজিতে সহযোগিতার জন্য মামলা করার নির্দেশ দেন।
এ প্রেক্ষিতে বংশাল থানা (০১ ফেব্রুয়ারি) পেনাল কোডের ১৭০/৪২০/৩৮৫/৩৮৬/৫০৬ ধারা অনুযায়ী মামলা দায়ের করে। এরই ধারাবাহিকতায় চেইনম্যান মিঠুকে আজ কর্পোরেশনের চাকরি হতে অপসারণ করা হয়েছে এবং আনসারের পিসির সার্বিক কর্মকাণ্ড ও তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে বংশাল থানা কর্তৃক গৃহিত কার্যক্রম সম্পর্কে অবগত করার লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ বরাবরে পত্র প্রেরণের লক্ষ্যে নথি উপস্থাপন করা হয়েছে।