ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২, ২৫ জ্বমাদিউল সানি ১৪৪৭

ঐতিহাসিক ভাষণ বিশ্বের নিপীড়িত মানুষকে অনুপ্রেরণা দিয়েছে : রাষ্ট্রদূত শামীম


প্রকাশ: ৭ মার্চ, ২০২১ ০৯:৪৬ পূর্বাহ্ন


ঐতিহাসিক ভাষণ বিশ্বের নিপীড়িত মানুষকে অনুপ্রেরণা দিয়েছে : রাষ্ট্রদূত শামীম

কূটনৈতিক প্রতিবেদক : রাষ্ট্রদূত শামীম আহসান শুরুতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল বীর শহিদদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ০৭ মার্চ এর ভাষণ সম্পর্কে বলেন, এই ভাষণ শুধুমাত্র বাঙালি জাতিকেই স্বাধীনতা অর্জনে অনুপ্রাণিত করেনি, সারা বিশ্বের নিপীড়িত-নির্যাতিত স্বাধীনতাকামী মানুষকে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও মানুষকে প্রেরণা যোগাবে। 

ইতালিতে বাংলাদেশ দূতাবাস যথাযোগ্য মর্যাদা ও ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আজ ‘ঐতিহাসিক ০৭ মার্চ’ উদযাপন করেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর ০৭ মার্চ ১৯৭১-এ প্রদত্ত ঐতিহাসিক ভাষণ স্মরণে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আয়োজিত দিনব্যাপি এই অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, জাতির পিতা ও মুক্তিযুদ্ধের বীর শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন, বাণী পাঠ, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন এবং দেশি ও বিদেশি আলোচকদের অংশগ্রহণে আলোচনা সভা।

ভাষণটির অন্তর্নিহিত তাৎপর্য অনুধাবন করেই ইউনেস্কো ২০১৭ সালে এ ভাষণকে ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহাসিক’ (ওয়ার্ল্ড ডকুমেন্টারি হেরিটেজ) হিসেবে ‘মেমোরি অব দ্যা ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টার’ (আন্তর্জাতিক নিবন্ধের আন্তর্জাতিক স্মৃতি)-এ অন্তর্ভুক্ত করেছে বলে রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করে বলেন যে, এটি ভাষণটিকে একটি আন্তর্জাতিক মাত্রা দিয়েছে। 

তিনি আরও বলেন যে, ২০২১ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’ হওয়ায় এ বছরটি বাঙালি জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বছর। রাষ্ট্রদূত বর্তমান সরকারকে প্রবাসী-বান্ধব সরকার হিসেবে উল্লেখ করে ছুটির দিনে কন্স্যুলার সেবা প্রদানসহ দূতাবাস কর্তৃক প্রবাসীদের কল্যাণে গৃহীত সাম্প্রতিক বিভিন্ন কর্মসূচী সম্পর্কে সকলকে অবহিত করেন।

রোববার সকালে জাতীয় সঙ্গীতের সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচী শুরু হয়। এরপরে দূতাবাসের সভাকক্ষে দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। এরপরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর ০৭ মার্চ ১৯৭১ দেয়া ঐতিহাসিক ভাষণটি প্রদর্শন করা হয়। ঐতিহাসিক এই দিনের উপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্মিত প্রামাণ্যচিত্রও প্রদর্শিত হয়।     

ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশী রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক ছাড়াও বিদেশী নাগরিকগণের অংশগ্রহণে একটি প্রাণবন্ত আলোচনা সভায় ইতালির কাতানিয়া ও পালেরমো শহরে নিযুক্ত বাংলাদেশের অনারারি কনসাল জেনারেল যথাক্রমে এডভোকেট জোভান্নি ভানাদিয়া এবং ভিসেনজো দি তান্তো ঐতিহাসিক এই দিনটি উপলক্ষে তাদের শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন। 

এছাড়া রোমস্থ প্রখ্যাত লা সাপিয়েঞ্জা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মারা মাত্তা লিখিত বার্তার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণকে বাঙ্গালি জাতির স্বাধীনতার দিক নির্দেশক হিসেবে উল্লেখ করেন। 

আলোচকগণ ৭ই মার্চের ভাষণকে বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি অনন্যসাধারণ ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেন। প্রবাসীদের কল্যাণে দূতাবাস কর্তৃক গৃহীত সাম্প্রতিক কার্যক্রমের জন্যও বক্তারা দূতাবাসকে ধন্যবাদ জানান। 

উল্লেখ্য, আলোচনা সভায় ইতালি প্রবাসী ছাড়াও ইউরোপের অন্যান্য দেশে বসবাসকারী এবং বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থানকারী প্রবাসী বাংলাদেশিরা অংশগ্রহণ করেন।   

উল্লেখ্য, কোভিড মহামারীর ভয়াবহতার প্রেক্ষিতে ইতালি সরকার কর্তৃক আরোপিত কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে শুধুমাত্র দূতাবাসের সদস্যদের উপস্থিতিতে সীমিত পরিসরে দূতাবাসে এবং অনলাইন প্লাটফর্ম জুম এ অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়। 


   আরও সংবাদ