প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারী, ২০২২ ০৮:৩৪ পূর্বাহ্ন
 
            
নিজস্ব প্রতিবেদক: ইভিএমে কারচুপির বিষয়ে পরাজিত প্রার্থীর অভিযোগ বিষয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেছেন, পরাজিত হলে প্রার্থীরা এমনটা বলেই থাকেন। ইভিএমে নির্বাচন হলে কারচুপি করার সুযোগ নেই। এ কারণেই এ পদ্ধতির গ্রহণযোগ্যতা বেশি। ভোট চলাকালীন কিছু টেকনিক্যাল সমস্যা হতেই পারে। এটা শুধু আমাদের দেশেই হচ্ছে এমন না। সারা বিশ্বেই এই ত্রুটি দেখা দেয়। এটা কোনো অভিযোগের ভিত্তি হতে পারে না।
আজ সোমবার মন্ত্রণালয়ে নিজ কক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামীর সঙ্গে সাক্ষাত শেষে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে যা আন্তর্জাতিক মহল সরাসরি প্রত্যক্ষ করেছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনের ভোট গোটা জাতি ও আন্তর্জাতিক মহল প্রত্যক্ষ করেছে। মিডিয়া সরাসরি প্রত্যক্ষ করেছে। ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট হওয়ার পরও বিপুল ভোটে আওয়ামীলীগ প্রার্থী বিজয় অর্জন করেছে। ডিপ্লোমেটদের কাছে এই ম্যাসেজটা গেছে যে বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জে ইভিএমে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। এই নির্বাচন ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার হয়েছে এটা ডিপ্লোমেটরা নিজেদের মধ্যে শেয়ার করেছেন বলে জানান তিনি।
সব নির্বাচন ইভিএমে করা প্রসঙ্গে তাজুল ইসলাম বলেন, সরকার চাইলে সারাদেশে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করতে পারতো কিন্তু সেটা করছে না। কারণ ইভিএম একটি নতুন পদ্ধতি। যেকোন নতুন পদ্ধতি কিছুটা চ্যালেঞ্জিং হয়। পৃথীবির সব দেশেই এ সমস্যা আছে। আমেরিকায় ও ভারতের ইলেকশনেও কিছু কিছু যান্ত্রিক গোলযোগ হয়েছে। সময়ের ব্যবধানে সমস্যা সমাধান হবে। এখন সেজন্য ইচ্ছা করলেই সরকার দেশে একসাথে ইভিএম আরম্ভ করতে পারবে না। এটা এডোপটোশনের জন্য সময় লাগে। টেকনোলজি পরিচালনা এবং ব্যবহার করার জন্য মানুষকে উপযোগী করে তুলতে হবে।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সংঘাতের প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী জানান, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে মানুষ স্বতস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহন করছে। প্রতিযোগীতামূলক নির্বাচন হচ্ছে। কোথাও কোথাও নিজেদের প্রার্থীকে জেতাতে গিয়ে বিবাদের ঘটনা ঘটে, এতে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে যা আমাদের কাম্য না। এ ধরনের দুর্ঘটনা শুধু বাংলাদেশের নয় পার্শ্ববর্তী দেশসহ সারা বিশ্বে দৃষ্টান্ত রয়েছে।
বিনা ভোটের নির্বাচন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিনা ভোটে না কথাটা হলো বিনা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বীতা। শব্দটা পরিবর্তন করা দরকার। এখানে বিনা ভোটে হয়নি। কোন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলো না। এটা ডেমেক্রেসিতে নতুন কিছু নয়। বাংলাদেশেই এ ঘটনা ঘটেছে সেটা ঠিক না। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কিছু প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ার উদাহরণ আছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড ও ভারতসহ অনেক গণতান্ত্রিক দেশেই হয়ে থাকে। আমার এলাকায়ও বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছে।
ভারতীয় হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ভারত সারাদেশের উপজেলা, পৌরসভা পর্যায়ে কিচেন মার্কেটের অবকাঠামো নির্মাণের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে। শাক-সবজি, মাছ-মাংসসহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ে ভারতীয় সরকার প্রতিবেশী বন্ধু দেশ হিসেবে আমাদের উন্নয়ন কাজে অংশ নিতে চায়। তারা এ বিষয়ে আমাদের প্রস্তাব দিলে আমরা উদ্যোগ নেবো।
এই মার্কেট খুব একটা ব্যয় বহুল না, এট আমরা নিজেরাই তৈরি করতে পারি এমন প্রশ্নের জবাবে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, হ্যাঁ এ মার্কেট তৈরি করা খুব ব্যয়বহুল না। আমরা নিজেদের উদ্যোগেও করছি। তারা যখন বন্ধুত্বের নির্দশন স্বরূপ কিছু অবদান রাখতে চায়। সেখানে আমার মনে হয় না কোন দোষের কিছু হবে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সাথে পৃথিবীর প্রায় সকল দেশের সাথে ভালো সম্পর্ক আছে। এই সম্পর্কের কারণে প্রতিদিনই আমাদের কাছে কিছু বিদেশি সংস্থা ও উন্নয়নসহযোগীরা আসেন। তারা বিভিন্ন সময় আমাদের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু আমাদের ও দেশের জন্য যেটা কল্যাণকর ও উপকারী সেগুলো আমরা গ্রহণ করি।