প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১১:৪৯ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী ফেব্রুয়ারিতে অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশন। আজ শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টার পর বক্তব্য দেওয়ার সময় এ কথা জানান তিনি।
জাতিসংঘ সনদের আট দশক পূর্তি উপলক্ষ্যে সব সদস্য রাষ্ট্রকে অভিনন্দন জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘গত আট দশক ধরে জাতিসংঘ ধারাবাহিকভাবে তার কর্মপরিধি সম্প্রসারিত করেছে এবং নানা ক্ষেত্রে আরো গভীরভাবে সম্পৃক্ত হয়েছে। বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা, মানবাধিকার, বিশ্বব্যাপী মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন, ন্যায়বিচার, ন্যায্যতা ও সমতা প্রসারে জাতিসংঘ অনস্বীকার্য ভূমিকা রেখেছে।’
'জাতিসংঘের কারণেই আজ বিশ্বের ১২০টি দেশের প্রায় ১৩ কোটি বিপদাপন্ন মানুষকে জরুরি খাদ্য ও মৌলিক মানবিক সহায়তা এবং ৪৫ শতাংশ শিশুকে টিকা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। জাতিসংঘের সংস্থাগুলো বহুপাক্ষিক সহযোগিতায় বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, স্যানিটেশন, টিকা এবং অন্যান্য জীবনরক্ষাকারী সেবা ও সরঞ্জামের যোগান দিয়ে দুর্দশাগ্রস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে,’ বলেন তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, 'গত বছর এই মহান সভায় আমি দাঁড়িয়েছিলাম সদ্য গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত একটি দেশের রূপান্তরের আকাঙ্ক্ষা শোনানোর জন্য। আজ আমি এই রূপান্তরের অগ্রযাত্রায় আমরা কতটুকু অগ্রসর হতে পেরেছি তা বলব।’
'পৃথিবীর প্রতি ১০০ জনের মধ্যে প্রায় ৩ জন বাংলাদেশে বাস করে' উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'ভূ-রাজনৈতিকভাবে বিশ্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে বাংলাদেশ রয়েছে বলে আমাদের এ ইতিহাস জানার দরকার, তা কিন্তু নয়। বরং এ কারণে বাংলাদেশের এই বর্ণনা গুরুত্বপূর্ণ যে, তা সাধারণ মানুষের অসাধারণ ক্ষমতার ওপর আস্থা তৈরি করবে।'
'এ কারণে বর্ণনাটি গুরুত্বপূর্ণ যে তা বিশ্বের সব দেশের মধ্যে আশার সঞ্চার করবে, যে সংকট যত গভীরই হোক না কেন বা তার নিরসন যত অসম্ভবই মনে হোক না কেন, কখনোই তা থেকে উত্তরণের পথ হারিয়ে যায় না,' বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল ক্ষমতার ভারসাম্যপূর্ণ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামো গড়ে তোলা- যেখানে আর কোনো স্বৈরশাসকের আবির্ভাব হবে না, কোনো নির্বাচিত নেতা রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক স্বরূপকে ক্ষুণ্ণ করতে পারবে না, কিংবা রাষ্ট্র ও জনগণের রক্ষকরা ভক্ষকে পরিণত হতে পারবে না।’
'শাসনব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, নির্বাচন ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম, নারী অধিকারসহ সকল জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার করার জন্য আমরা ১১টি স্বাধীন সংস্কার কমিশন প্রতিষ্ঠা করি। কমিশনগুলো জনমত যাচাই ও গভীর পর্যালোচনা করে বিস্তারিত সংস্কার কার্যক্রম সুপারিশ করে,' যোগ করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনারা জানেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আমরা জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছি। পাশাপাশি, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও আইনের শাসন নিশ্চিত করবার জন্য আমরা নিরবচ্ছিন্নভাবে নাগরিকবান্ধব সংস্কার চালিয়ে যাচ্ছি।’