প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ পূর্বাহ্ন
রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও পাসপোর্ট পাওয়ার বিষয় নিয়ে অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। চট্টগ্রামে আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয় এবং পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসে গিয়ে এসব বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছে দুদকের টিম।
আজ রবিবার দুদকের চট্টগ্রাম জেলা সমন্বিত কার্যালয়-১ এর একটি এনফোর্সমেন্ট টিম নগরীর লাভ লেইনে আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ে যায়। টিমের সদস্যরা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খানের সঙ্গে কথা বলে রোহিঙ্গা জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া সংক্রান্ত বেশকিছু তথ্য সংগ্রহ করেন।
দুদক এনফোর্সমেন্ট টিমের সদস্য সহকারী পরিচালক রতন কুমার দাশ গণমাধ্যমকে বলেন, নির্বাচন কর্মকর্তারা তথ্য দিয়েছেন, এখন পর্যন্ত ৪৬ জন রোহিঙ্গাকে শনাক্ত করেছেন যারা তথ্য গোপন করে জালিয়াতির মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়েছেন। কেন্দ্রীয় সার্ভারে তাদের তথ্য সংরক্ষিত আছে। এই ৪৬ জনের মধ্যে একজন রোহিঙ্গা ডাকাতও আছে, যে কয়েকদিন আগে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে।
উল্লেখ্য, লাকী নামে এক নারী গত ১৮ আগস্ট স্মার্ট কার্ড তুলতে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে গেলে তার হাতের পুরনো এনআইডিতে ১৭ ডিজিটের নম্বর দেখে কর্মকর্তাদের সন্দেহ হয়। পরে জেরার মুখে লাকী নিজের প্রকৃত নাম রমজান বিবি এবং ২০১৪ সালে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসার পর টেকনাফের মুচনী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ছিলেন বলে স্বীকার করেন।
লাকী আক্তারের বিষয়টি শনাক্তের পরই চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিস তদন্ত করে ৪৬ জন ভুয়া রোহিঙ্গা নাগরিককে শনাক্ত করে যারা বাংলাদেশি এনআইডি পেয়েছে এবং তাদের তথ্য নির্বাচন কমিশনের তথ্যভাণ্ডারে আছে। নির্বাচন কমিশনের এনআইডি উইংয়ের উচ্চপর্যায়ের একটি টিমও এ বিষয়ে তদন্ত করছে।
দুদক কর্মকর্তা রতন কুমার দাশ বলেন, নির্বাচন কর্মকর্তারা দাবি করছেন, সাধারণত ল্যাপটপ ব্যবহার করে সার্ভারে তথ্য আপলোড করা হয়। অনেক ল্যাপটপ হারিয়ে গেছে বা নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের দু’টি তদন্ত কমিটি কাজ করছে। তারা কি কি তথ্য-উপাত্ত পেয়েছে সেগুলো আমরা খতিয়ে দেখব। সবকিছু দেখে কমিশনে আমরা বিস্তারিত অনুসন্ধানের সুপারিশ করে প্রতিবেদন পাঠাব।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুনীর হোসাইন খান বলেন, রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়ার বিষয়ে দুদক অনুসন্ধান করছে। সেজন্য তারা তথ্য নিতে এসেছিলেন। আমরা সব তথ্য দিয়েছি। আমাদের তদন্ত কমিটিও যে কাজ করছে, সেটা উনারা জেনেছেন।
উল্লেখ, গত ১২ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম নগরীর মনসুরাবাদে পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসে অভিযান চালায় দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম।