প্রকাশ: ২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১০:০১ পূর্বাহ্ন
মোঃ ফখরুল ইসলাম, চৌগাছা ( যশোর) প্রতিনিধি :
যশোরের চৌগাছায় এবার সোনা ঝরছে পাটের সোনালি আঁশ থেকে। হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। মৌসুমের শুরু থেকেই ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে পাট। বাজারে প্রতিমণ পাট বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার টাকার উপরে। এতেই স্বস্তি কৃষকের।
গত মৌসুমের শেষের দিকে হঠাৎই পাটের দাম বৃদ্ধি পায়। সে ধারাবাহিকতায় উপজেলায় পাটের চাষ বেড়েছে। কাটা-ধোঁয়ার পরে তা এখন বাজারে বিক্রি করতে শুরু করেছে।
উপজেলার কয়েকটি অঞ্চল ছাড়া বেশির ভাগ এলাকাল পানির স্বল্পতায় পাট পচানো ও ধোয়ার কাজে বেগ পেতে হচ্ছে কৃষকদের। জাগ দিতে লাগছে বাড়তি মজুরি ও শ্রম।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় পাটচাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল দুই হাজার হেক্টর জমিতে। কিন্তু পাটের দাম বেশি থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে বেশি চাষ হয়েছে। উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নের চাষিদের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণের সরকারি প্রণোদনার বীজ বিতরণ করা হলেও ভারতসীমন্তবর্তী উপজেলা হওয়ায় গ্রামাঞ্চলের কিছু কিছু চাষি ভারতীয় বিভিন্ন জাতের পাটবীজ বপন করেন।
উপজেলার অন্যতম পাটবাজার পুড়াপাড়ায় ঘুরে দেখা গেছে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড় বাজারজুড়ে। সপ্তাহের রবি ও বুধবার সাপ্তাহিক হাট বসে এখানে। এছাড়া প্রতিদিনই আড়তদার পাট ক্রয় করেন ক্রেতাদের কাছ থেকে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যাপারীরা এখান থেকে ট্রাক ভরে পাট নিয়ে যায় বিভিন্ন এলাকায়।
ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, খুলনা, পাবনাসহ দেশের নানা জেলাতে যায় এ অঞ্চলের পাট।
কৃষকরা জানান, এবার ১ বিঘা জমিতে পাটচাষ ও কাটা-ধোয়া করতে ১৫ থেকে প্রায় ১৮ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে তাদের।
বিঘাপ্রতি এবার ফলন হয়েছে ১২ থেকে ১৩ মণ। সে হিসাবে ১ মণ পাটের দাম ৩ হাজার টাকা দরে বিক্রি করে তারা বিঘাপ্রতি ৩৯ হাজার টাকার পাটবিক্রি করতে পারছেন।
অবশ্য একটু নিম্নমানের পাট হলে ২ হাজার ৫শ’ থেকে ২৮/২৯শ’ টাকায় বিক্রি করতে পারছে। আর মধ্যম মানের পাট ৩ হাজার টাকা দরে আবার পাটের রং উন্নত মানের হলে মণ প্রতি ৩ হাজার ২শ’ টাকা দরেও বিক্রি হচ্ছে। গড় হিসাবে মণপ্রতি পাটের দাম ৩ হাজার টাকা থাকছে।
উপজেলার রামকৃষ্ণাপুর গ্রামের চাষি আজিজুর রহমান বলেন, ১৫ কাটা জমিতে পাট চাষ করে প্রায় দশ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তিনি আশা করছেন তার জমিতে ১০ মণ পাট হবে। সে হিসেবে প্রতিমণ ২ হাজার ৮শ’ টাকা দরে বিক্রি করতে পারলেও তার ১৮ হাজার টাকা লাভ হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সমরেন বিশ্বাস বলেন, পাটের কাক্সিক্ষত বাজার দর না পেয়ে চাষিরা একসময় পাট চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিল। কিন্তু বর্তমানে পাটের বাজার ভালো থাকায় চাষিরা লাভবান হচ্ছে, যে কারণে প্রতি বছরই পাটচাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।