প্রকাশ: ৩ অক্টোবর, ২০২৫ ০৭:৫৭ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর মিরপুর–১০ সেনপাড়া এলাকায় আলিফ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস থেকে যাত্রীদের নামিয়ে গুলি ছুড়ে আগুন লাগিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। চাঁদা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী গ্রুপ এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা বাসের চালক হাসান শেখের। এ ঘটনা মিরপুর থানায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন। এদিকে মালিকদের অভ্যন্তারীন দ্বন্দ্বের জেরেও ঘটতে পারে জানিয়েছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে মিরপুর আল হেরা হাসপাতালের গলির মুখে এ ঘটনা ঘটে।
ওই বাসের চালক হাসান শেখ বলেন, গত কয়েকমাস ধরে পরিবহন কর্তৃপক্ষের কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে আসছে একটি গ্রুপ। বাসটি পুড়ে অন্তত্য ৩–৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আলিফ পরিবহন বাসগুলো মিরপুর–১ নম্বর সনি হলের সামনে থেকে মিরপুর ১০ নম্বর, মহাখালী ও বনানী হয়ে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার রুটে যাত্রায়াত করে। গতকাল সকালে সনি হলে থেকে স্টাফ কোয়ার্টারে যাওয়ার পথে এই ঘটনা ঘটে।
এক যুগের বেশি সময় ঢাকার বিভিন্ন সড়কে বাস চালায়। তবে জীবনের প্রথম এমন ঘটনার সম্মুখীন হয়েছি জানিয়ে হাসান বলেন, সকালে গুড়িগুড়ি বৃষ্টির মধ্যে বাস নিয়ে বের হয়। পরে ঘটনাস্থলে পৌছালে চারজন ব্যক্তি হাতের ঈশারা করে থামতে বলে। প্রথমে ভাবছি তারা যাত্রী গাড়িতে উঠবে। কিন্তু ব্রেকে পা দিতেই দুজন ব্যক্তি লাফ দিয়ে ডান পাশে জানালার পাশে এসে গাড়ি থেকে নামতে বলে। না হলে গুলি চালাবে বলে হুমকি দেয়। একথা শুনে একটু ঘাবড়ে যায়। পরে তারা বাসের সব যাত্রীকে নেমে যেতে বলে। পরে আমাকে (হাসান) ও সহকারী কামরুল হাসানকে বাস থেকে নামিয়ে বেধম মারধর শুরু করে। এর মধ্যে তারা বাসে আগুন লাগিয়ে দিয়ে খালি গাড়িরে মধ্যে গুলি ছোড়ে।
তিনি বলেন, দীর্ঘ ১০ বছর আলিফ কোম্পানির বাস চালায়। এই প্রথম অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে। আগুন ধরিয়ে দেওয়া গাড়িটি মালিক ২ দিন আগে দিয়েছে। গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর, বর্তমানে পরিবার নিয়ে গাবতলী বড় বাজার এলাকায় থাকি।
আলিফ পরিবহনের রোড পরিদর্শক মোহাম্মদ সাগর বলেন, কিছুদিন আগে নেছার নামে এক ব্যক্তি চাঁদার দাবিতে তাদের স্টাফদের মারধর করে। এ ঘটনার সঙ্গেও তার সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে থানায় আসছি মামলা করার জন্য।
ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালিদ জানান, গতকাল সকাল ৭টা ২৩মিনিটে আগুন লাগার খবর পেয়ে মিরপুর ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট ৭টা ৩৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। তবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেন নি তিনি।
ঘটনার পর পুলিশ এসে বাসটি উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেয়। বর্তমানে গাড়িটি থানায় রয়েছে। তবে কোম্পানির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণেও এটি ঘটতে পারে বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। মিরপুর বিভাগের সহকারী কমিশনার (এসি) মিজানুর রহমান জানান, এ ঘটনায় একটি মামলা হবে। কোম্পানির অভ্যন্তারীণ ঝামেলাকে কেন্দ্র করেই ঘটনার সূত্রপাত। এখানে রাজনৈতিক কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। এছাড়া কোম্পানি থেকে কিছু কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে। সে কারণেও ক্ষুব্ধ হয়ে ছাঁটাই হওয়া কর্মীরা এটা ঘটনা পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তিনি জানান, চাঁদার বিষয়টিও তদন্ত করে দেখা হবে। ওই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে অপরাধীদের শনাক্তার চেষ্টা চলছে।